সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তেলীগাঁও( পশ্চিম পাড়া) গ্রামের আবু দে’র মারধরের অভিযোগে ওই ইউনিয়নের সাবেক সদস্য বিষ্ণু পদ পালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঐ ইউনিয়নের আবু দে’ বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, গত ২৯/৬/২২রাত সাড়ে১০টার সময়, তাহিরপুর উপজেলা উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তেলীগাঁও পশ্চিম পাড়া গ্রামের বিজয় পাল ওরফে ভিজার উঠানে এ ঘটনা ঘটেছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য তাহিরপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তের দায়িত্বরত তাহিরপুর থানার এস আই সিদ্দিক বলেন, আদালতের নির্দেশ পালনে, তদন্ত চলমান রয়েছে। খুব শ্রীগ্রই তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করব।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন-একই ইউনিয়নে, জিতু তালুকদার( ২৮) পিতা-হরেন্দ্র, তালুকদার, সতু দাস(৫৫), ( সজিত দাস(৫০) উভয় পিতা সুখময় দাস, রুবেল দাস(২৬) লিকশন দাস( ১৮) উভয় পিতা সতু দাস, বীরেন্দ্র দাস(৫২)পিতা বরেন্দ্র দাস, ইতেশ দাস(৪৫)পিতা দানেশ দাস, বিশ্বনাত পাল বাবলু(২৮), সাগর পাল (২৫) উভয় পিতা বিষ্ণু পদ পাল, সাং তেলী গাও পশ্চিম পাড়া,থানা তাহিরপুর, জেলা সুনামগঞ্জ। আরও ৩/৪ অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায় ,নামাংকিত আসামিগন অত্যন্ত উগ্র দাঙ্গা বাজ,সন্ত্রাসী ওলাঠিয়াল প্রকৃতির লোক বটে। আসামীগনের সহিত এলাকার বিভিন্ন বিরোধ বিদ্যমান থাকায় আসামীগন আমার ও আমার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের ক্ষতি সাধন করার গভীর ষড়যন্ত্র লিপ্ত থাকে। অতঃপর উক্ত আক্রোশে ঘটনার কিছু ক্ষন পূর্বে আমার ছোট ভাই ১নং স্বাক্ষী রাজন দে কে স্বাক্ষী বিজয় পাল ওরফে ভিজার বাড়ির উঠান অর্থাৎ ঘটনারস্থলে দেখিতে পাইয়া নামাংকিত আসামি গন বে-আাইনি জনতায় মিলিত হইয়া ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনার স্থলে আসামি গন একই উদ্দেশ্য সাধন কল্পে হাতে দা রামদা লোহার রড বাশের লাঠি ইত্যাদি প্রাননাশক অস্ত্রাদিতে সজ্জিত হইয়া আমার ভাই ১নং স্বাক্ষীকে ঘেরাও করিয়া ফেলে। তখন ১নং আসামী বিষ্ণু পদ পাল হুকুম দিয়া বলে ” শালার বেটাকে খুন করিয়া ফেল”উক্ত হুকুমের সাথে সাথে ৯নং আসামি বিশ্বনাথ পাল বাবলু তাহার হাতে থাকা রামদা দিয়া প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া ছেদ মারিলে, উক্ত ছেদ ১নং স্বাক্ষীর মাথার বাম পাশে পিছনে পড়িয়া মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ২নং আসামি জিতু তালুকদার তাহার হাতে থাকা রামদা দিয়া প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে ১নং স্বাক্ষীর মাথা লক্ষ্য করিয়া ছেদ মারিলে উক্ত তাহার মাথার ডান পাশে পড়িয়া মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।
অতঃপর ৫নং আসামী রুবেল দাস তাহার হাতে থাকা রামদা দিয়া প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে ১নং স্বাক্ষী রাজন দের মাথা লক্ষ্য করিয়া ছেদ মারিলে রাজন দে একটু ঘুড়িয়া গেলে উক্ত ছেদ তাহার পিঠের উপরিভাগে পড়িয়া মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ৪নং আসামি সজিত দাস তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া ১নং স্বাক্ষীকে প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মাড়িয়ে উক্ত স্বাক্ষী তাহার বাম হাত দিয়া প্রতিহত করিলে বাম হাতের কাঁধের উপর পড়িয়া হাড় ভাঙ্গা ও ফুলা বেদনা দারক জখম হয়। ১নং স্বাক্ষীর শোর চিৎকারে আমিসহ মানীত স্বাক্ষীগন ঘটনাস্থলে আগাইয়া গেলে ৭ও ৮ নং আসামি তাহাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়া আমাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে। অপরাপর আসামি গন তাহাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়া ১নং জখমী স্বাক্ষীকে এলোপাতাড়ি বাইরাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা বেদনা দায়ক জখম করে।
আসামি গন তাহাদের হাতে থাকা অস্ত্রাদি প্রদর্শন করিয়া স্বাক্ষীগনের সম্মুখে হুমকি দেয় যে,যদি এই বিষয় নিয়া কোন বিচার পঞ্চায়েত বা মামলা মোকদ্দমা করিস তাহলে তোকে বা তোর পরিবারের লোকজনকে সুযোগ মতো পাইলে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিব” বলিয়া আসামি গন ঘটনাস্থল ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলে কোন কোন স্বাক্ষীগনের সহায়তায় ১নং জখমীকে তাহিরপুর হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাহাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং তাহার জখমের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার করিলে তাহাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাহাকে ভর্তি করিয়া চিকিৎসা প্রদান করার পরামর্শ দিলে তাহাদেরকে ভর্তি করা হয়। আমি স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিই।২নং স্বাক্ষীর বাড়ির বারান্দায় লাইটের এবং আমার ও স্বাক্ষী গনের হাতে থাকা টর্চ লাইটের আলোতে আসামি গন কে চিনিতে পারি। জখমীর চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং স্থানীয় ভাবে আপোষের চেষ্টা করিয়া ও থানায় গিয়া মামলা দায়েরে ব্যর্থ হইয়া অদ্য মাননীয় আদালতে আসিয়া মামলা দায়েরে সামান্য বিলম্ব হইল। স্বাক্ষী গন ঘটনা প্রমাণ করিবেন। জখমীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজজাত নালিশের সহিত দাখিল করা হইল।উপরোক্ত অবস্থা অত্র নালিশ গ্রহণ করতঃ আসামি গনের বিরুদ্ধে তড়িৎ আইনানুগ ব্যবস্ত গ্রহণ করার পক্ষে আদেশ দানে হুজুরের মর্জি হয়।
অভিযোগ দন্ড বিধঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩২৭/৫০৬(২)ধারা আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল আদালত তাহিরপুর সুনামগঞ্জে অভিযোগ দাখিল করেছে আবু দে। সি আর মোকদ্দমা নং ১৩০/২০২২ইং হামলার শিকার আবু দে’র অভিযোগ, এ ঘটনায় তারা তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আদালতে আত্মসর্ম্পণ করে বিল নিয়ে এসেছি। তিনি আরও বলেন আমরা, দু্রবল, গরীব মানুষ, বিবাদীগন ক্ষেমতাধর (মেম্বার) ক্ষেমতার প্রভাব কাটিয়ে প্রায় সময় জুলুম অত্যাচার করে থাকেন। তবুও নিরবে সয়ে যাই, আর সইতে পারছি না, তাই আদালতের স্মরা পর্ণ হয়েছি।
তাহিরপুর থানার ওসি আবদুল লতিফ তরফদার জানান,সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালত থেকে একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি এস আই সিদ্দিককে দায়িত্ব দিয়েছি, দ্রুত মামলা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবে।
এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য বিষ্ণু পদ পাল জানান, বিরোধী চক্রের ইন্ধনে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরোদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনার অনেক পরে ঘটনারস্থলে পৌঁছেছি।