অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রামের রাউজানে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আয়েশা সিদ্দিকাকে (৩৮) চেয়ার ছুড়ে মেরেছেন পৌরসভা যুবদলের নেতা মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই কর্মকর্তা। এ সময় কার্যালয়ের টেবিলও ভাঙচুর করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম এ হামলা চালান বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
হামলার কথা স্বীকার করে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খারাপ আচরণ করায় মাথা ঠিক ছিল না। তাই চেয়ার ছুড়ে মেরেছি। অনেকবার গেছি ওই কার্যালয়ে। কিন্তু আমাকে মূল্যায়ন করেননি। অথচ আমরা দলের ত্যাগী কর্মী।’
উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ও হামলার শিকার পিআইও আয়েশা সিদ্দিকার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন মাস ধরে রোজ কয়েকবার করে পিআইও কার্যালয়ে এসে যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম কাজ পাওয়ার জন্য ধরনা দিচ্ছিলেন। এক মাসে আগে অস্ত্র নিয়ে প্রকল্প কার্যালয়ে গেলে আয়েশা সিদ্দিকা যুবদল নেতাকে বের করে দেন। এ সময় পিআইওকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে আবারও পিআইও কার্যালয়ে এসে কাজ পাওয়ার দাবি জানান। তখন পিআইও তার চেয়ারে বসা ছিলেন। শহিদুল ইসলামকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ঠিকাদারদের কাজ দেওয়া হয়। অন্য কাউকে কাজ দেওয়া সম্ভব নয়। এ কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে শহিদুল ইসলাম পিআইওর দিকে চেয়ার ছুড়ে মারলে সেটি তার কার্যালয়ের টেবিলের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে গ্লাস ও টেবিল ভেঙে যায়। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ভাঙচুরের শব্দ শুনে দৌড়ে এলে পালিয়ে যান শহিদুল ইসলাম।
দলীয় সূত্র জানায়, হামলাকারী শহিদুল ইসলাম সাবেক পৌরসভা যুবদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ নগর শরীফ পাড়ার বাসিন্দা তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান বলেন, ‘শহিদুল ইসলামের আগে পদবি থাকলেও বর্তমানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনও পদ-পদবি নেই।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছিল আমার ওপর। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছি।’
আয়েশা সিদ্দিকা অভিযোগ করে জানান, ওই যুবদল নেতা একবার অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ে এলে তিনি বের করে দেন। এতে যুবদল নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে কয়েকবার হুমকি দিয়েছিলেন। আজ দুপুরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চেয়ার দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করেন। তখন তিনি মাথা সরিয়ে নিলে অল্পের জন্য বেঁচে যান।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘হামলার সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ বলেন, ‘সরকারি দফতরে হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’