অনলাইন ডেস্ক :
বগুড়ায় গরিবের চাল (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি) চুরির সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের চার নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনসার আলী, সারিয়াকান্দির কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজিউল হক গাজী এবং শিবগঞ্জের সৈয়দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাজু।
জানা গেছে, র্যা ব বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির সদস্যরা ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে নন্দীগ্রামের শিমলা বাজারে আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান আনিসের বাড়ি ও শোরুম থেকে ১৬৮ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এ সময় আনিস ও তার সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা আনসার আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যা ব তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ১১ এপ্রিল দুপুরে উপজেলার গণকপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে ১০২ বস্তা চালসহ মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে। তিনি পুলিশকে জানান, চালগুলো তার চাচাতো ভাই সৈয়দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাজু। পরে পুলিশ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে ২৮৮ বস্তা চাল আত্মসাতের অভিযোগে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ৬ এপ্রিল সকালে কুতুবপুর বাজার থেকে ডিলার, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজিউল হক গাজীকে গ্রেফতার করেন। পরে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে।
বগুড়ার সোনাতলা থানা পুলিশ গত ৯ এপ্রিল বিকালে উপজেলার দড়ি হাঁসরাজ গ্রামের বাড়ি থেকে ৫০ বস্তা চালসহ মিঠু মিয়াকে গ্রেফতার করে। তিনি মধুপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে সোনাতলা থানায় মামলা হয়েছে।
তবে জেলা কৃষক লীগের নেতারা দাবি করেন, মিঠু তাদের সংগঠনের কেউ নন।
এছাড়া তিন মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে ডিলার ও গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজেদ হোসেনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওনক জাহানের ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাকে এ জরিমানা করেন।
এদিকে রোববার বিকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।
নেতৃবৃন্দ চাল চুরির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করায় উল্লিখিত চার নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেন। তাদের বহিষ্কার করতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে তবে মিঠু মিয়া ও ওয়াজেদ হোসেনের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।