হোম এক্সক্লুসিভ চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের যাঁতাকলে ভোমরা স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা, দেখার যেন কেউ নেই!

চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের যাঁতাকলে ভোমরা স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা, দেখার যেন কেউ নেই!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 350 ভিউজ

সংকল্প ডেস্ক:

রাজনৈতিক নেতা-প্রশাসনের কর্তারা অবগত হওয়ার পরও ভোমরা স্থল বন্দরের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের দৌরত্ব্য অব্যাহত। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বাসভবনে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশুর উপস্থিতিতে বন্দরের জিরো পয়েন্টে চাঁদাবাজির ইস্যু নিয়ে ভোমরা বন্দরে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত হলেও আলোচনা হয়নি। ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সেদিন বিকালে জাঁকজোমকপূর্ণভাবে সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আতাউল হক দোলনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই যেন আলোচনার বাহিরে চলে যায় ভোমরা স্থল বন্দরের জিরো পয়েন্টে চাঁদাবাজির ইস্যু। রাজনৈতিক নেতা-প্রশাসনের কর্তারা অবগত হওয়ার পরও কোনো একঅজানা কারনে মুখে কুলুপ এঁটেছে সবাই। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ হাজার ভারতীয় রূপি চাঁদা আদায় করে চলেছে ভোমরা স্থল বন্দরের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। ফলে ভোমরা স্থল বন্দরের এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের হাতে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে ভোমরা স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা। বাধ্য হয়েই তাদের গুণতে হচ্ছে বৈদ্যশিক মুদ্রায় মোট অংকের চাঁদা, যা ব্যাপকভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলছে দেশের অর্থনীতিতে। এমনকি আমদানিজাত পণ্যের বাজার হয়ে উঠেছে লাগামহীন ঘোড়া। পরিস্থিতি এমন যে, চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের যাঁতাকলে ভোমরা স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা, দেখার যেন কেউ নেই! এখন ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিক নেতা-প্রশাসনের কর্তারা অবগত হওয়ার পরও ভারতীয় আমদানিজাত পণ্যবাহি ট্রাক থেকে অবৈধভাবে বৈদ্যশিক মুদ্রায় চাঁদাবাজি কোন অদৃশ্য কারণে রয়েছে অব্যাহত ? কেনই বা সবাই মুখে এঁটেছে কুলুপ? চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কেন এত অনীহা সবার?

প্রসঙ্গত: গতবছর ২১ জুন ভোমরা স্থল বন্দরে ভারতীয় আমদানীজাত পণ্যবাহি ট্রাক থেকে দুইশো রুপি হারে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নামে চাঁদাবাজি শুরু হয়। ঐদিন ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভাররা চাঁদাবজির প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করলে ৩ ঘন্টা আমদানী-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যহত হয়। এই ধরনের চাঁদাবাজির কারনে অভ্যন্তরীন বাজারে আমদানীজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকে।

এক পর্যায়ে
ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কয়েক ঘন্টা চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ভোমরা স্থল বন্দরের জিরো পয়েন্টে ভারতীয় আমদানীজাত পন্যবাহি ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে। ট্রাক প্রতি ভারতীয় দুইশো রুপি হারে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নামে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করলেও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রশ্ন উঠেছে এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের নেপথ্যের গডফাদার কে?

গত বছর ২১ জুন থেকে বন্দরের জিরো পয়েন্টে আমদানীজাত পণ্যবাহি ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি শুরু হলে ভোমরা আমদানী-রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন চাঁদাবাজি বন্ধের দাবীতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করলেও তার কোনো কাজ হয়নি। যার কারনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্যবসায়ীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে চাঁদা আদায় কাজে নিয়োজিত সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কর্মচারীকে জিরো পয়েন্ট থেকে উঠিয়ে দেয়। ফলে ঐ দিন বিকালে কয়েক ঘন্টা চাঁদাবাজি বন্ধ থাকে । কিন্তু পরদিন সকাল থেকে ভোমরা স্থল বন্দরের জিরো পয়েন্টে যথারীতি চাঁদাবাজি শুরু হয়।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ১৫৩টি আমদানীজাত ভারতীয় পণ্যবাহি ট্রাক থেকে ৩০ হাজার ৬ শত ভারতীয় রূপি চাঁদা আদায় করা হয়েছে ও বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ২১৪টি আমদানীজাত ভারতীয় পণ্যবাহি ট্রাক থেকে ৪২,৮০০ ভারতীয় রূপি চাঁদা আদায় করা হয়েছে। তারপর থেকেই রাজনৈতিক নেতা-প্রশাসনের কর্তারা অবগত হওয়ার পরও অদ্যবধি ভোমরা স্থল বন্দরের চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের দৌরত্ব্য অব্যাহত। প্রকাশ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা আদায় অব্যাহত থাকলেও দেখার যেন কেউ নেই।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু ভোমরা স্থল বন্দর থেকে দূর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জঞ্জালমুক্ত করার ঘোষণা দিলেও তার ভুমিকা নিয়েও ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে?

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন