মোংলা প্রতিনিধি :
মোংলায় সরকারের অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (৪০ দিনের কর্মসূচি) টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমনকি অতি দ্ররিদ্র শ্রমিকদের তালিকায় তার আপন ভাইয়ের নাম দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। কর্মহীন মৌসুমে দুস্থ পরিবারের স্বল্প মেয়াদী কর্মসংস্থান এবং গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্ধেকের বেশি টাকা শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে আত্মসাতের এই বিচার চেয়েছেন এলাকাবাসি। আর এই বিষয়ে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে তদন্তে গেলে সংশ্লিষ্ট কাজের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী সোহান আহম্মেদকে চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডলের ভাই কংকন কুমার মন্ডল লাঞ্চিত করেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সোহান আহম্মেদ বলেন, মিঠাখালী ইউনিয়নের বসির খন্ড, খানজাহান আলী বাজার ও খড়খড়িয়া এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসূচি কাজের চরম অনিয়ম পেয়েছেন তিনি। বসির খন্ডে ৩৩ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও ছিলেন ২৩ জন। খানজাহান আলী বাজার এলাকায় ছিলেন ২৬ জন। অথচ থাকার কথা ২৭ জন এবং খড়খড়িয়া এলাকায় ৩৯ জনে ৩৩ জন শ্রমিকের উপস্থিত পান। একারণে তিনি উপস্থিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করায় বসির খন্ড এলাকায় কাজের শ্রমিকের তালিকায় নাম থাকা চেয়রম্যানের ভাই কংকন কুমার মন্ডল তাকে মারধর করেন। এছাড়া ওই তিন এলাকায় ঠিকমত শ্রমিকরা কাজও করেননি এবং অধিকাংশ শ্রমিকের পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও পায়ে ছিল জুতা পড়া। আর ৪০ দিনের কর্মসূচির মাটি রাস্তার পাশে না দিয়ে চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল তার বাড়ীর সীমান প্রাচীর মজবুত করতে সেখানে দিয়েছেন। এমন গুরুতর অভিযোগেরও প্রমান সরেজমিনে পেয়েছেন বলেও জানান প্রকৌশলী সোহান আহম্মেদ।
জানতে চাইলে এবিষয়ে মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল সবকিছু অস্বীকার করে বলেন, পারলে এ বিষয়ে নিউজ করেন।
এদিকে এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার ট্যাগ অফিসার সোহান আহম্মেদকে লাঞ্চিত করার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ওই ঘটনায় চেয়রম্যানের ভাই কংকন মন্ডল বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সোহান আহম্মেদের অফিস কক্ষে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। এসময় তার ভাই চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৪০ দিনের কর্মসূচি কাজের শ্রমিক উপস্থিতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউএনও আরও বলেন-এবিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর শ্রমিকদের তালিকায় চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নাম থাকা এবং অর্ধেক শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ জাফর রানা।