হোম খুলনাঝিনাইদহ উপজেলা এটিও সহ ৭০ শিক্ষক ভ্রমনে, বিদ্যালয় ছিল খোলা

উপজেলা এটিও সহ ৭০ শিক্ষক ভ্রমনে, বিদ্যালয় ছিল খোলা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 71 ভিউজ

শিপলু জামান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) :

কোন অনুমতি ছাড়াই সুন্দরবন ভ্রমনে গেলেন কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ জন শিক্ষক। গত রোববার বিকাল পর্যন্ত ৭০ শিক্ষক ফিরে না আসায় একাধিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির ছিল। জানাগেছে রোববার সন্ধ্যায় তারা ফিরেছেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসানের সাথে ওই শিক্ষকরা ৪ দিনের সফরে সুন্দরবন ভ্রমনে যান। তবে, ভ্রমন বিলাসের জন্য শিক্ষকদের কেউ কেউ ছুটির অনুমতি নিয়েছেন বলে জানালেও অধিকাংশ শিক্ষকই ছুটি না নিয়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে স্কুল খোলা রেখেই শিক্ষকরা ভ্রমনে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকদের মধ্যেও বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি জানতে রোববার সরেজমিনে উপজেলার মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ ৩ জন শিক্ষক ভ্রমনে গেছেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা আসিমা বিশ^াস সাংবাদিকদের জানান, তাদের বিদ্যালয়ে মোট ৫ জন শিক্ষক। তাদের ৩ জন শিক্ষক পিকনিকে গেছেন। আর একারনে বিদ্যালয়টির ক্লাস নেওয়া সমস্যার কথা স্বীকার করলেও তারা দু’জনেই ক্লাস চালিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। তবে, বিদ্যালয়ের মুভমেন্ট খাতায় প্রধান শিক্ষক সহ ৩ জন শিক্ষকের ছুটি নিয়ে ভ্রমন বা পিকনিকে গেছেন এমন কোন কিছুই লেখা দেখা যায়নি।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অর্চনা বিশ্বাস জানান, প্রধান শিক্ষক সহ ৩ জন শিক্ষকের ছুটির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে, অন্য মারফতে তিনি শুনেছেন শিক্ষকরা ভ্রমনে গেছেন।

দূর্গাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পারভিনা আক্তার জানান, তার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতন এক দিনের ছুটির দরখাস্ত দিয়ে ওই পিকনিকে গেছেন। রোববারও ফিরে না আসাতে বিষয়টি তিনি এটিওকে অবহিত করেছেন।অন্য এক সুত্রে জানা গেছে, শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতনের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে ফারহানা নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর দুই কলির চুল টেনে ছিড়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে। ব্যাগ থেকে বই বের করতে দেরি করায় ক্লাসের মধ্যেই ওই অমানবিক কান্ড ঘটিয়েছিল শিক্ষক রতন। এ নিয়ে পরিবারের থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগও দেওয়া আছে। কিন্তু তারপরও ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে ভ্রমনে গেলেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বেলাট দৌলতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ জন ও দূর্গাপুর বিদ্যালয় সহ উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে ওই ভ্রমনে যাওয়া শিক্ষকদের অধিকাংশই ছুটি না নিয়ে কাগজে ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন।

এসব বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান জানান, বিদ্যালয় খোলা থাকলে একসাথে একাধিক শিক্ষকের ছুটি বা ভ্রমনে যাওয়া অপরাধ। আর এক বিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষক ভ্রমনে যাচ্ছেন এমন বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে, বৈধভাবে ছুটি না নিয়ে ভ্রমনে যাওয়া শিক্ষকদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ মোহন কিশোর সাহা বলেন, একই সময়ে এক বিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষক ভ্রমনে যাওয়া আইন সম্মত নহে। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন