হোম খুলনাসাতক্ষীরা উন্নয়নের নামে এডিপি ও উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পে নয় ছয় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

উন্নয়নের নামে এডিপি ও উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পে নয় ছয় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 25 ভিউজ

হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা):

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সহ (এ ডি পি), উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের প্রকল্পে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদির বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পদত্যাগের আগে প্রকল্পে নয় ছয় সহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি অর্থ লোপাটের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন। গৃহীত প্রকল্প গুলো ৩০ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে কাজ শেষ করে দৃশ্যমান করার কথা থাকলে ও অধিকাংশ প্রকল্পে কাজ না করে চলমানের কথা বলা হয়েছে। কোথাও আবার সামান্য কাজ করে সমুদয় বিল তুলে প্রকল্প সমাপ্ত করে দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কালিগঞ্জ উপজেলায় (এডিপি) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ১২টি ইউনিয়নের ৯৬ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকার ৪৬ টি প্রকল্প গত গত ২৯/১০ /২০২৩ ইং তারিখে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় রেজুলেশন এর মাধ্যমে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী প্রকল্প গুলো পাস করেন। এর মধ্যে ৪৪ টি প্রকল্প ছিল দরপত্র বা টেন্ডারের মাধ্যমে। আর ২২ টি প্রকল্প পিআইসি গঠন করে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। প্রকল্প গুলোর মধ্যে ছিল রাস্তা সংস্কার, সোলিং করণ, সিসি ক্যামেরা, খেলা ধুলার সামগ্রী বিতরণ, প্যালাসাইডিং, সবজি চাষের চারা বিতরণ, রাস্তা সংস্কার। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন খাত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২ কোটি ১৮ লক্ষ ২৬ হাজার ৩০৩ টাকার ১২ টি ইউনিয়নে মোট ৩৪ টি প্রকল্প গত ১০/৮/২৩ ইং তারিখে উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী সভাপতি হিসেবে পাশ করেন। এরমধ্যে ২১ টি প্রকল্প দরপত্র টেন্ডার এবং ১৩ টি প্রকল্প ছিল পিআইসি গঠন করে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়। এই প্রকল্পের মধ্যে রাস্তা সংস্কার, ছাত্র-ছাত্রীদের বাইসাইকেল বিতরণ, সেলাই মেশিন বিতরণ, ড্রেন নির্মাণ, প্লাসাইডিং তৎকালীন ,উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজস্ব মৎস্য ঘেরের জমিতে কৃষি স্মার্ট ভিলেজ পানির প্লান্ট বাবদ ৩২ লক্ষ টাকার কাজ এখনো শুরু হয়নি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এ ডি পি) এবং উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ৩ কোটি ১৪ লক্ষ ৭২ হাজার ৩০৩ টাকা। কালিগঞ্জ উপজেলার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) এবং উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন খাত প্রকল্পের কাজ না করে নাম মাত্র কাজ করে পুরো অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। পিআইসির বেশির ভাগ প্রকল্প কাজ হয়নি। অনেক প্রকল্পের কাজ হয়েছে সামান্য। আবার অনেক প্রকল্পের খোঁজ মিলেনি। কিন্তু প্রায় সব প্রকল্পের টাকা তুলে নেওয়ার নানান গুঞ্জন উঠেছে অথচ এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তর এর এলজিইডির মাধ্যমে। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রকল্পে সরজমিনে দেখা যায় আংশিক কাজ না করে বা সামান্য কাজ করে কাগজ কলমে প্রায় সব কটি প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। সরজমিনে এই সমস্ত পিআইসি প্রকল্পে টাকা লোপাট করতে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর পিরোজপুর নামক স্থানে প্লাসাইডিং কাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের খোয়া, সিমেন্ট দিয়ে খাম্বা বা পাইলিং খুটি তৈরি করে তার একান্ত সচিব খ্যাতো সাজেদুল হক সাজুর মাধ্যমে নাম মাত্র কাজ করিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এবং ওই সমস্ত পিএসসি প্রকল্পে উপজেলা চেয়ারম্যানের তৈরি করা গৃহপালিত নিজস্ব ইউপি সদস্যদের পিএসসি প্রকল্প গুলোর সভাপতি করে তার স্বাক্ষর এর মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে ।

এই সমস্ত প্রকল্পে গিয়ে প্রকল্প সভাপতির কোন খোঁজ মেলেনি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর নিকট জানতে চাইলেও তিনি জানাতে অস্বীকৃতি জানান। ঐ সমস্ত প্রকল্পের কোন কাগজপত্র সাংবাদিকরা দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে তালবাহানা ও অস্বীকৃতি জানায়। কারণ হিসেবে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেই প্রার্থী এ কারণে তার নির্বাচনে প্রভাব পড়ার কথা জানান। তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল বারি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাসের নিকট প্রকল্পের বিষয় জানতে চাইলে উনারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্রকল্প সভাপতির নিকট খোঁজ নিতে বলেন। থলের বিড়ালের ভাগ নিতে মিলেমিশে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। শেষ মেষ উপায়ন্তর না পেয়ে একজন গণমাধ্যম কর্মী গত ৩ এপ্রিল তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে লিখিত আবেদন করেও আজ ও পর্যন্ত তার কোন সাড়া মেলেনি। দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পাওয়া অধিকাংশ ঠিকাদাররা কাজ শুরু করার আগে প্রকল্প বিক্রি করে লভ্যাংশ নিয়ে অন্য ঠিকাদারের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। আর এই সমস্ত ঠিকাদারদের নিকট থেকে উপজেলা প্রকৌশলী এবং সহকারী প্রকৌশলী নগদ নারায়ণের পার্সেন্টেজ নিয়ে নিম্ন মানের ইট, বালু দিয়ে কোন রকমে দায় সারা ভাবে রাস্তার ইটের সোলিং কাজ তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যানকে দিয়ে উদ্বোধন করে নিজের ভোটের প্রচার চালাইছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে । তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সাঈদ মেহেদির কাটা খালিতে অবস্থিত নিজের মৎস প্রজেক্টে মৌতলা, মথুরেশপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী বাইপাস রোডের পাশে কৃষি স্মার্ট ভিলেজের পানির প্লান্ট নির্মাণের নির্মাণের জন্য ৩২ লক্ষ টাকার প্রকল্প দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারকে দিলেও ওই ঠিকাদার নানান হুমকিতে আজও কাজ শুরু করতে পারেনি বলে জানা গেছে ।

এই ভাবে বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, কুশুলিয়া ইউনিয়নের বাজার গ্রাম ১ নং ওয়ার্ডে বাবুর বাড়ি হতে মিন্টুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার ইটের সোলিংয়ের জন্য ২ লক্ষ, কুশুলিয়া পানু ময়রার বাড়ি হতে অঞ্জনার বাড়ি পর্যন্ত ইটের সোলিং করার জন্য ১ লক্ষ, মহৎপুর আমতলায় মোড়ল ইসলামের বাড়ি হতে ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি করনের জন্য ৬ লক্ষ এবং ঘোজাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা ইটের সোলিং বাবদ ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার প্রকল্প দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছে শ্যামনগরের সাহেব এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী শাহিনুর রহমান। কিন্তু ওই কাজ কিনে নিয়েছে উপজেলা পরিষদের কম্পাউন্ড থেকে ড্রেনের স্লাপ চুরি করা ঠিকাদার এবং কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর শাহজাহান মাস্টার । এই প্যাকেজ প্রকল্পের কাজ গুলি উপজেলা প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীদের ম্যানেজ করে নিম্নমানের ইট বালু পর্যাপ্ত পানি না দিয়েই দায়সারা যেন তেন ভাবে কাজ শেষ করলেও দেখার কেউ নাই। এইভাবে দরপত্রের মাধ্যমে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের প্রকল্প গুলো লুট পাট অনিয়ম ভাগাভাগি করে কাজ চলছে। সম্প্রীতি বিভিন্ন ইউনিয়নে পিআইসির ১২ টি প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজে নয় ছয় দায়সারা ভাবে কাজ করা হয়েছে। কোন প্রকল্পের অর্ধেক আবার কোনটির কোন কাজের খোঁজ মেলেনি। অথচ কাজ না করেও বিল তুলে আত্মসাতের গুঞ্জন উঠেছে প্রায় সব পিআইসি প্রকল্পের কাজ নিয়ে।

উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী তার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে তার ঘনিষ্ঠ ভাজন এপিএস খ্যাত সাজেদুল হক সাজুর দ্বারা কাজ গুলো দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করেছে। অনেক গুলো কাজ না করেও ছবি তুলে উপজেলা প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে সম্পন্ন করেছে। বাজারগ্রাম মোহাম্মদ ড্রাইভারের বাড়ি হতে রফিকুল এর বাড়ি পর্যন্ত পুকুরের পাড় প্যালাসাইডিং করার জন্য ২ লক্ষ টাকার কাজ ৭০/৮০ হাজার টাকায় ২৪ টি পাইলিং খুঁটি ২ হাজার ইট এবং নামমাত্র সিমেন্ট বালি দিয়ে দায় সারা ভাবে শেষ করেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, জনগণ প্রতিবাদ করে প্রকল্প সম্বন্ধে এবং প্রকল্প সভাপতি কে জানতে না পেরে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর অনিয়ম-দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ করেছে। একইভাবে বাজার গ্রাম কাশেমপুর আফজালের বাড়ি হতে মুর্শিদের বাড়ি পর্যন্ত পুকুরের পার্শ্ব প্যালাসাইডিং প্রকল্পে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ সেখানে ও সাজেদুল হক সাজু একই ভাবে নয় ছয়ের এর মাধ্যমে সম্পন্ন করেছে। এরমধ্যে আরো ৩ টি প্রকল্পে ইট সোলিং করনের নামে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ সম্পন্ন করেছে। নলতা ইউনিয়নে সেন্ট্রাল সেহারা জামে মসজিদ সংলগ্ন কার্পেটিং রাস্তা হতে ড্রেন নির্মাণের জন্য ২ লক্ষ টাকার প্রকল্পে কোন কাজের দেখা মেলেনি। নলতা ইউনিয়নে ৪ টি ওয়ার্ডে জামে মসজিদে বসার স্থান প্রকল্পে ১ লক্ষ টাকার কোন কাজ চোখে পড়েনি। কাশিবাটি আব্বাসের হাটখোলা সংলগ্ন লিয়াকতের বাড়ি হতে সাত্তারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা প্যালাসাইডিং প্রকল্পে দেড় লক্ষ টাকা তার পাশে লাগুয়া কাশিবাটি সাকাতের বাড়ির পাশে প্যালা সাইডিং করন বাবদ দেড় লক্ষ টাকা করে ২টি প্রকল্পে ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ১ টি প্রকল্পে ঐ সাজেদুল হক সাজু লক্ষ টাকার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে ২ টি প্রকল্পে অন্তত ২ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই সমস্ত প্রকল্পের কাগজপত্রে প্রকৃত সভাপতি কে সেটা নলতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বাররাও সেটা জানে না । তারালি ইউনিয়নে জলবদ্ধতা দূরীকরণে পাইপ সরবরাহ বাবদ ১ লক্ষ টাকা, আরশাদ মেম্বারের বাড়ির সামনে কালভার্ট নির্মাণ বাবদ ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার প্রকল্প ঘুরে কাজের কোন হদিস মেলেনি। একই ভাবে কাক শিয়ালি দাসপাড়া পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণ বাবদ ১ লক্ষ ৫ হাজার ১৭৪ টাকা এবং কাকশিয়ালি জিপিএস এর সামনে ইটের সোলিং করন বাবদ ৮৪ হাজার টাকার প্রকল্প ছাড়াও কুশুলিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মধুসূদনের বাড়ি হতে মুরালি ডাক্তারের বাড়ি প্যালাসাইডিং করন প্রকল্পে ১ লক্ষ টাকার কোন কাজ হয়নি। তবে এই সমস্ত প্রকল্প গুলোর কে সভাপতি জানা না গেলেও কাজ গুলো যে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজের তত্ত্বাবধানে নিজের লোক সাজেদুল হক সাজু কে দিয়ে করিয়ে নয় ছয় করেছে এমন দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসীর।

এ প্রসঙ্গে কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, তারালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট, ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন নাঈম, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোবিন্দ মন্ডল রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম আলিম আল রাজি টোকন সহ ইউপি সদস্য আবু মুসা, আকলিমা খাতুন, খায়রুল ইসলাম নিকট জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন খাত এবং উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন ( এডিপি) খাতের টাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হাতে। তাই সে আমাদের মতামতের কোন মূল্য না দিয়ে আমাদের থেকে প্রকল্প চেয়ে সে তার নিজের ইচ্ছামতো প্রকল্প দিয়ে পিআইসি কমিটি, ক্রয় কমিটি গঠন করে কাজ করলেও আমাদের করার কিছু নাই। এখানে সব দায়বদ্ধতা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রকৌশলীর। অতএব এই সমস্ত বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবেন। সরে জমিনে প্রকল্প ঘুরে দেখার খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদির গাত্রদহ শুরু হয়ে যায়।

তিনি ফোন করে সাংবাদিকদের জানান, তিনি নির্বাচিত হয়ে ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করে দেবেন। তবে তথ্য দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান এই মুহূর্তে তথ্য দিলে নিউজ হলে আমার নির্বাচনে প্রভাব পড়বে অতএব আপনারা এখন নিউজ করবেন না। তবে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য দিতে এবং কোন প্রকল্পের কত টাকা বরাদ্দ এবং কি পরিমান বিল পরিশোধ করা হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য দিতে সমস্যা কোথায় এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি। এছাড়াও কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্টার করন সংক্রান্ত প্রকল্পে ১ লক্ষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ন প্রকল্পে শিশুদের জন্য দোলনা ও স্লিপার খেলনা সরঞ্জাম বিতরণ বাবদ ২ লক্ষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কন্যা বর্তিকা পরিবারের মাঝে সহায়তা প্রদান প্রকল্পে ১লক্ষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসায় বেঞ্চ সরবরাহ প্রকল্পে ৩ লক্ষ (দরপত্র), পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি আনুষঙ্গিক ব্যয় ও তোদের কি বিল বাবদ প্রকল্পে ২ লক্ষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ফুটবল বিতরণ প্রকল্পে ২ লক্ষ, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ভলিবল বিতরণ ১ লক্ষ ৪৬ হাজার , এবং কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষের বীজ ও চারা বিতরণ প্রকল্পে ১ লক্ষ, টাকা করে বরাদ্দ দিলেও উক্ত প্রকল্প গুলোর এখনো কোনো খোজ বা পিআইসি কমিটির সম্পর্কে কোন কিছু জানা সম্ভব হয়নি। এজন্য ৩০ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়াও মৌতলায় তার নিজস্ব ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের কোন কাজের শুরু বা শেষের খোজ মেলেনি।বিগত পাঁচ বছরে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনিয়ম দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বর্তমান মৌতলা বাদে বাকি ১১ টা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জোট বদ্ধ ভাবে প্রতিবাদ হিসেবে তাকে ভোট না দেওয়ার মিশন নিয়ে উপজেলা জুড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন