বাণিজ্য ডেস্ক:
চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর এই চার পণ্যের শুল্ক কমানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তবে শুল্ক প্রত্যাহারে ভোক্তা সাধারণ কতখানি স্বস্তি পাবে এটি চিন্তার বিষয়।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভোক্তা স্বস্তি প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি স্বস্তি শুরু হয়ে গেছে। কারণ আজকে বা কালকে মধ্যে প্রজ্ঞাপন পেয়ে যাব। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসবে তার আগেই ট্যারিফ পুনঃনির্ধারণ সম্ভব বলে আশা করছি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অবহিত আছে।’
টিটু জানান, শিগগিরই ট্যারিফ কমিশন আমদানি ও উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দেবে। এতে করে ভোক্তারা দ্রুত সুফল ভোগ করতে পারবে।
কোনোভাবেই যেন সরবরাহ ঘাটতি না হয় সে প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরবরাহ ঘাটতি ঠেকাতে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ভোক্তাদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৎপর আছে।
চালের দাম প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে চাল আমদানির প্রয়োজন নেই, তবে কেউ কম দামে চাল বাজারজাত করতে চাইলে সরকারের আপত্তি নেই। এখন থেকে বাণিজ্য, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে বাজার মনিটরিং করবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের উৎপাদনের তথ্য ও যৌক্তিক মূল্য কৃষি বিপণন অধিদফতর জানিয়ে দেবে।
কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একযোগে বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে চাচ্ছি। ভোক্তা থেকে উৎপাদক পর্যায়ে কারসাজি ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় প্রসঙ্গে আহসানুল ইসলাম বলেন, ভোক্তা অধিকার যখন অভিযানে যায় তাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য থাকে না। কোন চাল কম উৎপাদন হয়েছে, মেয়াদ কতো দিন, দাম কতো; এজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় চালের তিনটি মৌসুমে (বোরো, আউস ও আমন), কোন এলাকায় কোন ধান, জাত, মৌসুম- এ সংক্রান্ত সব তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে দেবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় মিলারদের নির্দেশনা দেবে, ধান ভাঙালে সে ধানের উৎপাদনের বছর ও মিলিংয়ের তারিখ, উৎপাদন মূল্য, পাইকারি মূল্য, খুচরা মূল্য এগুলো বস্তায় উল্লেখ থাকবে। তখন কারসাজি করে পার পাওয়া যাবে না।
চালের বস্তায় দাম বাড়িয়ে লেখা হলে কি করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে দাম বাড়িয়ে লেখার কোনো সুযোগ নাই। এখানে ভেরাইটি ভিত্তিক দাম নির্ধারণ করে দেবে কৃষি আইন অনুযায়ী। এটা সর্বোচ্চ মূল্য বাস্তবায়ন করবে মিলার পর্যায়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় আর ভোক্তা পর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনটি মন্ত্রণালয় যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করতেছি বাজারে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাবো। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রতিটি মন্ত্রণালয় এটাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে। এখান আমাদের ওপর আস্তা রাখেন। আশা করছি আমরা পজেটিভ কিছু দিতে পারবো। আমরা সবাই যদি একটু দায়িত্বশীল হই তাহলে ভোক্তারা উপকৃত হবে।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রহমান প্রমুখ।