হোম অন্যান্যসারাদেশ ৬ ডিসেম্বর কলারোয়া পাক হানাদার মুক্ত দিবস, দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহন

৬ ডিসেম্বর কলারোয়া পাক হানাদার মুক্ত দিবস, দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 113 ভিউজ

দীপক শেঠ, কলারোয়া( সাতক্ষীরা) :

কোভিড-১৯’র প্রার্দুভাবে ৬ ডিসেম্বর কলারোয়া পাকস্থানী হানাদার মুক্ত দিবসটি স্বল্প পরিসরে পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলার দামাল ছেলেরা সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্থানী সেনাবাহিনীকে হটিয়ে অবরুদ্ধ কলারোয়াকে হানাদারদের কবল থেকে মুক্ত করে স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলন করে। দিনটিতে কলারোয়ার স্বাধীনচেতা মুক্তমনের মানুষ স্বাধীনতা লাভে স্বাধীন পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আনন্দ, উল্লাস প্রকাশ করে।

ঐতিহাসিক ও গৌরব উজ্জ্বল ওই দিনটি এবার কলারোয়াতে ’করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯’) প্রার্দুভাবে স্বল্প পরিসরে পালন করা হচ্ছে বলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল’র সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা জানান। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৬ ডিসেম্বর (রবিবার) সকাল ৮টায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্ত¡রে স্থাপিত স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবন মিলনায়তনে স্বশস্ত্র সংগ্রামের স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, সূত্র মতে, মহান মুক্তিযুদ্ধের কলারোয়ায় ৩৪৩ জন বীর সন্তান অংশ নেন। শহীদ হন ২৭জন মুক্তিযোদ্ধা এর মধ্যে কলারোয়ার বীর সন্তান ৯জন। আর এ পর্যন্ত কলারোয়ার ৮টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে কলারোয়ায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয় ছয়টি। প্রতিটি যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে পাকবাহিনীকে পরাস্থ করে অবশেষে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর কলারোয়া পাক হানাদার মুক্ত করা হয়।

কলারোয়া অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে শতাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত প্রবাসী সংগ্রাম পরিষদ। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন এমসিএ প্রয়াত মমতাজ আহম্মেদ, প্রয়াত ভাষা সৈনিক শেখ আমানুল্যাহ,বি,এম নজরুল ইসলাম, মোসলেম উদ্দীন, স্বর্গীয় শ্যামপদ শেঠ, প্রয়াত ইনতাজ আহম্মেদ, প্রয়াত মোছলদ্দীন গাইন ও প্রয়াত ডাঃ আহম্মদ আলী। কলারোয়া এলাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের অধীনে।

পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ পরিচালনা করেন কলারোয়ার দুই বীরযোদ্ধা মোসলেম উদ্দীন ও আব্দুল গফ্ফার। এই দুই বীর যোদ্ধার নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন কলারোয়ার বীর সন্তান সৈয়দ আলী, গোলাম মোস্তফা, আবুল হোসেন ও আঃ রউফসহ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে সংগঠিত রক্তক্ষয়ী ওই যুদ্ধে ৬শতাধিক পাকিস্থানী সেনা নিহত হয়। কলারোয়ায় পাক হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি বড় ধরনের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধেই ২৯ জন পাকিস্থানী সেনা নিহত হয়। শহীদ হয় ১৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর কলারোয়ার সীমান্ত এলাকা কাকডাঙ্গা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমনের মুখে হানাদাররা কাকডাঙ্গার ঘাটি ছাড়তে বাধ্য হয়। এ ভাবে দীর্ঘ ৯ মাস কলারোয়ার বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমনে অবশেষে ৬ ডিসেম্বর পাকিস্থানী সেনারা কলারোয়া ছাড়তে বাধ্য হয়। ওই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কলারোয়াকে মুক্ত করে, কলারোয়া থানা চত্বরে স্বাধীনদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন