বাণিজ্য ডেস্ক:
পাইকারিতে চিনির দাম কমলেও খুচরা বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি ও মিল পর্যায়ে তদারকির প্রয়োজন। তিন মাস আগে আমদানি করা চিনির দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা পাচ্ছেন না তারা। এরইমধ্যে বাজারে ১৪৪ টাকা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লিখে প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ছেড়েছে কোম্পানিগুলো।
সাড়ে ৬ মাস আগে গত বছরের ১৩ আগষ্ট চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তখন প্রতিকেজি খোলা চিনির দাম ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয় ১৩৫ টাকা। এরপর দাম কমানো বা বাড়ানোর কোনো ঘোষণা দেয়নি সংগঠনটি।
পরে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরকারি মিলে উৎপাদিত লাল চিনির দাম প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। যদিও সেদিন রাত ১০টায় দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করা হয়।
অথচ সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, পবিত্র রমজান সামনে রেখে এরইমধ্যে বাজারে ১৪৪ টাকা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লিখে প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ছেড়েছে কোম্পানিগুলো। এদিকে বাজারে নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫ টাকা বেশিতে ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে খোলা চিনিও। ক্ষেত্রবিশেষে ১৫০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে যৌক্তিক কোনো উত্তর না থাকলেও নানাভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা।
এক বিক্রেতা বলেন, ‘মোকামে দাম বেশি। আমরা বেশি দামে কিনে এনেছি বিধায় বেশি দামে বিক্রি করছি।’ এদিকে চিনির দাম নিয়ে আক্ষেপ ক্রেতাদের। এক ক্রেতা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম যে নির্বাচনের পর নতুন প্রতিমন্ত্রী এসেছেন। তিনি বিভিন্ন অ্যাকশন নিচ্ছেন। কাজেই আমরা ভালো ফলাফল পাবো। কিন্তু পাচ্ছি না।
অন্যদিকে কয়েকদিন আগে পাইকারিতে ৫০ কেজির এক বস্তা চিনির দাম কিছুটা কমে ৬ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৬ হাজার ৯০০ টাকায় নামলেও আড়তদাররা বলছেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম কমাচ্ছেন না।
মিষ্টি চিনি যখন ভোক্তাকে ভোগাচ্ছে তিক্ত স্বাদে; তখন বাজার ঘুরে দেখা গেল, রমজানের অন্যতম অনুষঙ্গ বেসনের দাম বছর ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে অন্তত ৪০ টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। যেখানে গত বছরের একই সময়ে প্রতি কেজি বেসন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা।
দাম বাড়া নিয়ে এক ক্রেতা বলেন, বেসনের দাম বাড়ার তো কোনো কারণ দেখছি না। এটি তো নিত্যপণ্য না। এটি রমজানের বিশেষ পণ্য। তাছাড়া আমরা তো প্রতিনিয়ত বাজার করি। তাই ১০ টাকা বাড়লেও মনে হয় যে অনেক বেশি দাম বেড়ে গেছে।
তাছাড়া বাড়তি ডালের দামও। সরকারি বিপণন সংস্থার (টিসিবি) পরিসংখ্যান বলছে, বছর ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ আর সর্বোচ্চ সাড়ে ৩৪ শতাংশ বেড়েছে মুগ ডালের দাম। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ছোলার দাম ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকা, মুগডাল ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা এবং দেশি মসুর ডাল ১৩৫ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা।