হোম রাজনীতি ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬৪ জেলায় বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা

১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬৪ জেলায় বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 17 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে আগামী মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে রমজান শুরু হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিএনপির পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘১০ দিনের মধ্যে ৬৪টি জেলায় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করবে বিএনপি। জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা এসব সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় শহরগুলোতে সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি জেলায় জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির তারিখ ও সিনিয়র নেতাদের তালিকা মিডিয়াকে জানানো হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে মহানগর, বিভাগীয় শহরে কর্মসূচি পালিত হবে। এসব কর্মসূচি রমজানের আগেই শেষ হবে।’

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা এখন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে। যারা ৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মনে-প্রাণে মেনে নিতে পারেনি এমন লোকদেরকে চিহ্নিত করতে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল পদক্ষেপ সবার কাছে সফল হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারে কিন্তু এই সরকারের ব্যর্থতা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা হবে । এ কারণে বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাফল্য দেখতে চায়। কিন্তু সরকার নিজেদেরকে সাফল্য দেখতে চায় কিনা এটিও ভাববার বিষয় রয়েছে। সরকারের ‘কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপে’ কম গুরুত্তপূর্ণ ইস্যু বাদ দিয়ে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।

তিনি বলেন, পতিত সরকারের গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ফ্যাসিস্টদের নিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং করে বলেছেন, যে শহরে আমরা দিনের বেলা ঘুরতে পারি না সে শহরের কাউকে আমরা ঘুমাইতে দিব না। লীগের নয়া প্রজেক্টের মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন সে। এমন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে এখনও গ্রেপ্তার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতা।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেনজির আহমেদের সাথে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের ভার্চুয়াল কনফারেন্সে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতার মধ্যে পড়ে। ইতিমধ্যে হাসিনার নির্দেশে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা। পুলিশের গাড়ি থেকে পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়ে যতোটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, উল্টো বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

তিনি বলেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৫৭২ জন নেতা ও তার দোসরদের জামিন হয়েছে। ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ডিবি অফিসে নিয়ে ছয় কোটি টাকা চাঁদা আদায় চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তারের তিন দিনেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের সিন্ডিকেটের প্রধান এসএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাদেক। গণহত্যার মামলার আসামিরা কিভাবে জামিন পাচ্ছে, আমরা সরকারের কাছে সেটির স্পষ্ট ব্যাখ্যা জানতে চাই।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা-নাগরিকদের গণঅভ্যুত্থানে বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালানো অপরাধীদের কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে সরকারের কাছে সেটি জানতে চাই। সহস্রাধিক মানুষ হত্যা, হাজার হাজার পঙ্গু ও আহত হওয়ার এই বর্বরোচিত ঘটনা ও ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার সঠিক বিচার না হলে বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ হয়ে পড়বে অনিশ্চিত।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন