আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কর্ণাটকে স্কুল ক্যাম্পাসে হিজাব পরে গেলেও শ্রেণিকক্ষে ঢোকার আগে তা খুলে রেখে দিয়েছিলেন মুসলিম ছাত্রীরা। গেরুয়া স্কার্ফ গলায় জড়িয়েও শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশের ঘটনাও সামনে আসেনি।
বিবাদের জেরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কর্ণাটকের হাইস্কুলগুলোতে এটাই ছিল প্রথম দিনের চিত্র।
এদিকে মঙ্গলবার কর্ণাটক হাইকোর্টে উদুপির একটি কলেজের কয়েকজন মুসলিম ছাত্রী ইউনিফর্মের রঙের হিজাব পরে তাদের ক্লাসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো মতামত দেননি। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ফের এই মামলার শুনানি হবে।
উদুপির কলেজ ছাত্রীদের আইনজীবী দেবদত্ত কামাথ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্তীর বেঞ্চের সামনে যুক্তি দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলো মুসলিম ছাত্রীদের স্কুল ইউনিফর্মের রঙের হিজাব পরে ক্লাসে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে থাকে। ফলে মুসলিম ছাত্রীদের জন্য সেই সুযোগ কর্ণাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও দেওয়া যেতে পারে। স্কুল-কলেজে হিজাব না পরার জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশের বিরোধিতা করে কামাথ দাবি করেছেন, উদুপির কলেজে ভর্তির পর দু’বছর পর্যন্ত হিজাব পরেই কলেজে আসতেন তার মক্কেল, মুসলিম ছাত্রীরা। কিন্তু আচমকাই পড়ুয়াদের একাংশ অন্য কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত পোশাক পরতে শুরু করায় মুসলিম ছাত্রীদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। কামাথের যুক্তি, পড়ুয়ারা কী ধরনের পোশাক পরবেন, তা ঠিক করে কলেজ ডেভলপমেন্ট কমিটি। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই কমিটিতে একজন বিধায়ককে রেখেছে। ফলে এই ধরনের কমিটি সংবিধানের অতিরিক্ত ক্ষমতা পেয়ে গিয়েছে। কামাথের অভিযোগ— কে, কী পোশাক পরবে তা ঠিক করার দায়িত্ব তৃতীয় পক্ষের উপর ছেড়ে দিয়েছে সরকার।
হিজাব নিয়ে আইনি সমাধান এখনও না এলেও উত্তেজনার মধ্যে স্কুল খোলাকে কেন্দ্র করে কর্ণাটকে আজ নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বেঙ্গালুরু, উদুপি, দক্ষিণ কন্নড় জেলাগুলোতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। হিজাব পরার পক্ষে-বিপক্ষের মতকে ঘিরে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তেজনা রয়েছে উদুপিতে। তবে আজ এই জেলার সবকটি স্কুলই খুলে দেওয়া হয়েছে। কর্ণাটকের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, পড়ুয়াদের উপস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরে ক্যাম্পাসে এলেও ক্লাসরুমে ঢোকার সময়ে তা খুলে রেখেছিলেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা পর্বও ঠিক ভাবে এগিয়েছে। উদুপির তহসিলদার প্রদীপ কুরুডেকার জানিয়েছেন, মুসলিম ছাত্রীরা হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে নিয়েছে। হিন্দু পড়ুয়াদের কেউ গেরুয়া পোশাক পরে স্কুলে আসেনি। উদুপি শহর ও স্কুলগুলির আশপাশে মোতায়েন ছিল পুলিশ বাহিনী।