অনলাইন ডেস্ক:
প্রথমে পকেট কেটে মানিব্যাগ চুরি, পরে সেই মানিব্যাগ ফেরত দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে আদায় করত মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অঙ্কের অর্থ ও স্বর্ণালংকার। রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বিত্তশালীদের টার্গেট করে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল তারা।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দক্ষিণখান জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. তরিকুর রহমান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: ফাহিম হোসেন খান শুক্ত (১৯), কাজী আহাদ হোসেন (৩৪), মো. মামুন মোল্লা (২৬), রুবেল (২৬), মো. ইমরান হোসাইন (২৪) ও মোছা. সালমা আক্তার (৩৫)।
তরিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রিয়াজ আহমেদ (২৮) ১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় দাফতরিক কাজে নেভাল হেডকোয়ার্টার্সে আসেন। কাজ শেষে পরদিন উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বাস কাউন্টারে টিকিট কাটার জন্য যান। কিন্তু মানিব্যাগ হারিয়ে যাওয়ায় টিকিট না কেটে ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিকদিতে তার বাবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
পথিমধ্যে খিলক্ষেত রিজেন্সি হোটেলের সামনে এলে ভুক্তভোগীর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল আসে। কলদাতা হারিয়ে যাওয়া মানিব্যাগটি তার কাছে আছে জানান।
ভুক্তভোগী রিয়াজ কলালের দেয়া ঠিকানানুযায়ী দক্ষিণখান থানার ফায়দাদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ড্রিমটাচ বিল্ডিংয়ের সামনে গেলে তাকে একটি বাসার তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৬ জন তাকে একটি রুমে জোর করে নিয়ে যান। তার হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে তারা। রিয়াজের কাছে থাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা এবং তার শ্বশুরকে মোবাইলে কল করিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার আদায় করে তারা।
পরে অপহরণকারীরা রিয়াজ আহমেদকে ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে রিয়াজ দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন। অভিযান চালিয়ে পুলিশ প্রথমে আসামি ফাহিম হোসেন খান শুক্তকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত বাকি সহযোগী আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
আসামি মামুন মোল্লার কাছ থেকে মুক্তিপণ দেয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এডিসি মো. তরিকুর রহমান।