আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার দাশনগরের বাসিন্দা রিমা সিংহ। বয়স মাত্র ২৮। মাসখানেক পরই তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার (১০ জুন) রিমার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে আসেন হবু বর প্রবীর রায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের দেখা হওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু আর ফিরলেন না রিমা। কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় এক পুলিশ সদস্যের গুলিতে নিহত হন তিনি।
এদিন দুপুরে পার্ক সার্কাসে কলকাতা পুলিশের সদস্য চোডুপ লেপচার গুলিতে মৃত্যু হয় রিমার। এই খবর রিমার দাশনগরের বাড়িতে পৌঁছানো মাত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রিমার মায়ের কথায়, আমার মেয়েটা যে এভাবে চলে যাবে তা ভাবতেও পারিনি। ও বেলা ১২টা নাগাদ হাসতে হাসতে বেরোল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কখন ফিরবি। ও বলল, ‘সন্ধ্যায় ফিরব। এর কিছুটা পর আমাদের বাড়িওয়ালা আমাকে ডেকে বললেন, রিমার মৃত্যু হয়েছে গুলিতে।’
রিমার মা আরও জানান, ওর (রিমার) বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আমাদের হবু জামাই প্রবীরের বাবা মারা গেছে। আজই বিয়ের দিন পাকা করার কথা ছিল। সেজন্যই প্রবীর এসেছিল। তিনি বলেন, প্রবীরের কথা জানানো হলে তাকে অপেক্ষা করার কথা বলে রিমা।
রিমা তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন। রিমার মায়ের কথায়, পাঁচ বছর ধরে ওর বাবার কারখানা বন্ধ। আমার মেয়েই সংসার চালাত। বাড়িতে রিমার এক ভাই রয়েছে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে পুরো পরিবার শোকস্তব্ধ।
শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে পার্ক সার্কাস এলাকার বেকবাগানে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের আউট পোস্টে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষী চোডুপ তার রিভলবার দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালান।
শুক্রবারই প্রথম বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের আউট পোস্টে দায়িত্ব পালন করতে আসেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দুপুর আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চোডুপ এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন।
১০ থেকে ১৫ রাউন্ড গুলি ছোড়েন চোডুপ। এরপর গলার কাছে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রিমা।