মোঃ মিজানুর রহমান জুয়েল,মনপুরা (ভোলা) :
চরম দুর্ভোগে কাটাচ্ছে দিন বিদ্যুৎহীন ভাবে মনপুরাবাসি। দেখার জন্য কেউ নেই, স্মার্ট যুগে অন্ধকারে মনপুরা উপজেলা। সোলার বিদ্যুৎ এর নামে চলছে মনপুরা বাসির সাথে প্রতারণ মহাউৎসব।
বিদ্যুৎ যেন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মনপুরা বাসীর জন্য, কখন আসবে চেয়ে থাকে তোতা পাখির মতন ফ্যান বা বাতির দিকে। কপি-হারিকেন উঠে গেছে গ্রামগঞ্জের বাড়ি থেকে অনেক আগেই , অনেক বাচ্চারা চিনে না কপি-হারিকেন। মনপুরাবাসি স্মার্ট যুগে দেখতে পাচ্ছে এইসবকে।
প্রধানমন্ত্রীর ভিশন কে উপেক্ষা করছে প্রশাসন , স্মার্ট যুগে ও এনালক ভাবে চলছে মনপুরা উপজেলা। প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার প্রতিটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিবে, প্রশাসন মনপুরার জনগনকে দিয়েছে সেখানে কফি হারিকেন প্রাচীন যুগের সেই আলো।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গত কয়েক মাস থেকে বিদ্যুৎ দিচ্ছি আর নিচ্ছে লোডশেডিং আর লোডশেডিং, এজন্য ২নং হাজির হাট ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা ও সামাজিক সংগঠন সহ কয়েকটি সংগঠন আট ঘন্টা বিদ্যুতের দাবিতে মিছিল মিটিং আন্দোলন মানববন্ধন সহ সকল ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা তো কোন ফল হচ্ছে না।
যত আন্দোলন করে ততোই মানুষ বিদ্যুতের জন্য ভোগান্তি পরে, দানবের শাসন চলছে বিদ্যুতের নামে মনপুরা বাসি উপর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অবহেলায় পরে রয়েছে মনপুরা একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি , পর্যাপ্ত জনবল ও নাই , দিনমজুর লোকজন দিয়েই চলছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। লোকবলের অভাবে ঠিকমত সার্ভিস দিতে ও পারে না বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন যার জন্য শোনতে হতো গ্রাহকের আজেবাজে কথা। তারপরে ও মনপুরা বিদ্যুৎ পকৌশলী পেয়েছি জাতীয় পুরস্কার ও বিভাগীয় পুরস্কার,এত সুনাম অর্জনের পরও মনপুরা বিদ্যুৎ বিভাগ কে অবহেলিত করে রেখছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
সোলার বিদ্যুৎ আসবে বলে এটাকে আরো ভঙ্গুর করে রেখেছে, আগে দিনে যেখানে আট ঘন্টা বিদ্যুৎ পেত উপজেলা বাসি,সন্ধ্যা ছয় টা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত, আন্দোলনের পর, আট ঘন্টার বিদ্যুৎ, এখন মিলছে না ১ ঘন্টা ও।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি মনপুরা বাসির গলা চেপে ধরেছে। বিদ্যুৎ এর জন্য আন্দোলনের দুদিন পর থেকে একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ।
গতকাল উনিশে জুলাই থেকে রাতে বিদ্যুৎ না দিয়ে দিনে কখন কোন সময় দেয় তা গ্রাহক ও বলতে পারে না। গ্রাহক ও বলতে পারে না কত সময় দরে দেয় বিদ্যুৎ।
বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসায়ীদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে, সন্ধ্যার পরে দোকানপাট বন্ধের মতই থাকে, হারিকেন মোমবাতি দিয়ে কত সময় দরে দোকান চালানো যায়।
ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবসায়ীদের নির্ঘুম রাত কাটে দুশ্চিন্তায় বিদ্যুৎ ছাড়া তাদের ব্যবসা অচল। যারা ঋণ নিয়ে দোকান দিয়েছে তাদের মাথায় হাত, রাত শেষেই দিনের শুরুতেই আসে ঋণের কিস্তি।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সেবা মূলক ব্যবসা হলো ফার্মেসি ব্যবসা, বিদ্যুতের অভাবে ওই ব্যবসা ও ব্যাপক ধষের পথে এবং বিচ্ছিন্ন দ্বীপে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই, ইচ্ছে করলেই আনা যায় না এবং রাখা যায় না ভ্যাকসিন, ইনজেকশন কারণ হলো ফ্রিজ ছাড়া ফার্মেসি ব্যবসা অচল যেমন নেবুলাইজারেশন, ভ্যাকসিন ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনজেকশন রাখতে হয় ফ্রিজে।
বিদ্যুতের অভাবে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা ও বন্ধের পথে, হঠাৎ করে বিদ্যুতের পরিবর্তে হারিকেন, মোমবাতি, কফি দিয়ে পড়ালেখা করা ছেলে মেয়ে দের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে গার্ডিয়ানের দিন দিন দুশ্চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে।
মনপুরা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন চলে সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে, সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রীগুলোর অবস্থা এখন নিভু নিবু ভাব, তিনটির অবস্থা এখন একেবারেই জরাজীর্ণ।
দিনের বেলা সূর্যের আলোতে সৌর বিদ্যুৎ চলার কথা নিরবিচ্ছিন্ন সেখানে ঘন্টা ঘন্টাই হয় লোডশেডিং, রাতের বেলা না থাকার মতই চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো।
রাতে যত সময় চলে তত সময় জেনারেটর দিয়ে চলে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো, যার জন্য কোম্পানির অনেক খরচ হচ্ছে ব্যবসার কথা চিন্তা করে, ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং দিচ্ছে কোম্পানি, যেখানে জেনারেটর চলার কথা অনেক বেশি বৃষ্টি হলে দুই এক ঘন্টার জন্য।
মনপুরা উপজেলা যে তিনটি ইউনিয়নে সৌর বিদ্যুৎ চলে, বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম ৩০টাকা এবং মিটারের সার্ভিস চার্জ প্রতিমাসে ৭০ টাকা।
প্রশাসন না দেখার ভান করছে সোলার বিদ্যুৎ নামে প্রতারণার মহা উৎসব কে। সোলার বিদ্যুৎ মনপুরা মানুষের জন্য অভিশাপ,সোলার বিদ্যুতের জন্য জাতীয় গ্রিটের বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে দাবি আন্দোলনরত মনপুরা উপজেলাবাসি।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে মনপুরার (ওজোপাডিকো) ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এর আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ আবদুছ সালাম জানান, একেবারেই নষ্ট বড় ইঞ্জিনটা (১মেগাওয়াট) , ৫০০কেবি র ২টা ইঞ্জিন নষ্ট, ৬৫০ কেবি ইঞ্জিনটা দিয়ে দিনের বেলায় ১ঘন্টা করে বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি, ৫০০ কেবি র দুইটা ইঞ্জিন ঠিক করতে সময় লাগবে। জাতীয় গ্রীড বা নতুন ১মেগাওয়াট ইঞ্জিন না আসতে স্বভাবিক বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হবে না। তিনি আর ও জানান নতুন ইঞ্জিন বা জাতীয় গ্রীড এর বিদ্যুৎ আসতে সময় লাগবে ৪ থকে ৫ মাস তাও নিশ্চিত করে বলা যায় না।
