হোম রাজনীতি সুদ-ভাতা ছাড়া আয় নেই লতিফ সিদ্দিকীর

রাজনীতি ডেস্ক:

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে পাঁচ বারের সংসদ সদস্য আলোচিত আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাংক সুদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধার ভাতা ছাড়া আয়ের আর কোনো উৎস নেই।

হলফনামা থেকে জানা যায়, গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আয়ের উৎস বেড়েছিল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। কমেছে জমির পরিমাণ। দশম নির্বাচনে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে অর্থ থাকলেও বর্তমানে স্ত্রীর নামে কোনো অর্থ নেই। হলফনামায় এমন তথ্য মিলেছে।

দ্বাদশ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হলফনামা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কৃষিখাত, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান, ব্যবসা, শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ইত্যাদি কোনো খাতে কোনো আয় নেই। শুধুমাত্র ব্যাংক সুদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধা ভাতা থেকে আয় হয়। সব মিলিয়ে তার বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৪২৪ টাকা।

তবে গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধুমাত্র ব্যবসা থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার। দশম নির্বাচনে মন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ও মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতাসহ বাৎসরিক আয় ছিল ৬ লাখ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা এবং ব্যাংক সুদ পেতেন ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫৮ টাকা। একাদশ নির্বাচনে শুধুমাত্র শিক্ষকতা ও লেখক সম্মানী ২ লাখ ৫০ হাজার এবং ব্যাংক সুদের আয় ছিল ১৪ হাজার ৬৩৯ টাকা।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার নির্ভরশীল আয় ছিল ১৫ হাজার। এরপর দশম, একাদশ ও এবার দ্বাদশ নির্বাচনে নির্ভরশীল আয় দেখানো হয়নি।

বর্তমানে তার নগদ অর্থ দেখানো হয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫৮২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৩৫৯ টাকা। রয়েছে টয়োটা জিপ কার, বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত হিসেবে স্ত্রীর নামে রয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।

তবে দশম সংসদ নির্বাচনে নগদ ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। রুপালী ব্যাংকে ৭ হাজার ৩৫ এবং সাউথইস্ট ব্যাংকে ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ১৯৬ টাকা। এছাড়া একাদশ নির্বাচনে নগদ টাকা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭, রুপালী ব্যাংকে ১৫১৫ টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৬৬ টাকা এবং সোনালী ব্যাংকে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৮ টাকা ছিল।

বর্তমানে স্থাবর সম্পত্তিতে তার নামে কালিহাতীর ছাতিহাটীতে ৩৯ শতাংশ পতিত জমি, গাজীপুরের কাউলাটিয়ায় ১.৮৭ একর জমি রয়েছে। এছাড়া স্বামী ও স্ত্রীর নামে সংসদ সদস্য হিসেবে ৬ কাঠা, কালিহাতীতে এওয়াজমূলে ৭ শতাংশ এবং আত্মীয় হিতৈষীদের দ্বারা একটা ভবন রয়েছে। দশম নির্বাচনে নিজ নামে টাঙ্গাইলে ৬৬ শতাংশ, গাজীপুরের কাউলাটিয়া ১.৮৭ একর ও ছাতিহাটীতে ৩৯ শতাংশ পতিত জমির থাকার উল্লেখ করা হয়েছিল। এছাড়া স্বামী ও স্ত্রীর নামে শিতলপুর ও বনবাড়ীতে ২.২৮ একর, ঢাকায় ৬ কাঠা, কালিহাতীতে এওয়াজমূলে ৭ শতাংশ, ঢাকায় ব্যাংক ঋণে একটি দালান বা ভবন এবং কালিহাতীতে একটি ভবনের কথা উল্লেখ করেছেন।

বর্তমান পেশায় তিনি একজন শিক্ষক, লেখক ও গবেষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একাদশে লেখক, গবেষক ও অন্যান্য। দশমে মন্ত্রী, লেখক, গবেষক ও অন্যান্য। নবমে পেশায় উল্লেখ করেছিলেন, অন্যান্য (রাজনৈতিক) পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয়।

তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনের মামলাটি উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত রয়েছে।

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে সর্বমোট পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরমধ্যে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে লতিফ সিদ্দিকী দশম মন্ত্রীসভার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে হজ ও তবলিগ জামায়াত এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। এরপর ইসলামপন্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এরপর মন্ত্রিত্ব হারানোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এই নেতা। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে করেন। একপর্যায়ে তিনি নির্বাচন বয়কট করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন