জাতীয় ডেস্ক :
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে চলমান ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে অস্থিরতা কমাতে নেইপিদোকে বেইজিং বার্তা দেবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীতে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠকের পর একথা বলেন চীনের রাষ্ট্রদূত। এসময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রক্রিয়ায় চীনকে সহায়তার আহ্বান জানান সচিব।
রোহিঙ্গাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তার কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, রাষ্ট্রদূত বলেছেন বাংলাদেশ সীমান্তে যে উত্তেজনা চলছে এস টা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বন্ধুদের মধ্যে যেরকম কথা হয়, আমাদের মধ্যে সে রকম কথা হয়েছে। দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিকরা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের কাছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চান। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, পররাষ্ট্রসচিব আমাকে এ নিয়ে বলেছেন। সীমান্তে যা হচ্ছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি মনে করি এটি একটি আলোচনার বিষয়।
গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রথম দফায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাতের জেরে বাংলাদেশ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সেগুলো জানাতে আসিয়ান জোটের দূতদের ডাকা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে সেই ব্রিফিংয়ে ঢাকায় মিশন না থাকা লাওস ও কম্বোডিয়া বাদ ছিল। বাদ ছিল মিয়ানমারও। বাকি সাত দেশের কূটনীতিকেরা ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসিয়ানের সহযোগিতা চায় ঢাকা।
পরদিন মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের একই ভেন্যুতে ডেকে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে সহযোগিতার আহ্বান জানান। ওইদিন ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ জনের মতো রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং আরব বিশ্বের দূতরা উপস্থিত ছিলেন। তবে ব্রিফিংয়ে চীনের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে বেশ কয়েকদিন আগে গোলাগুলি চলছে। এক পর্যায়ে একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে। এতে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হন।
প্রসঙ্গত: গত ২০, ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বাংলাদেশে এসে পড়ে। সে কারণে গত ২১, ২৯ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
