অনলাইন ডেস্ক :
সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে এয়ার সেপারেশন কলাম থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের কারণে বিস্ফোরণ হয়নি। বিস্ফোরণের কারণেই আগুন লেগেছে। জেলা প্রশাসনের তদন্ত টিমও মনে করে, এয়ার সেপারেশন কলাম থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ি সূত্র জানিয়েছে, শনিবারের বিস্ফোরণে আহত প্রবেশ লাল শর্মাকে (৪০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মাথায় আঘাত থাকার কারণে তাকে নিউরোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রাত পৌনে ১০ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। প্রবেশ লাল উপজেলার ভাটিয়ারি এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত মতিলাল শর্মার ছেলে।
শনিবার বিস্ফোরণের পরপরই নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন— কারখানার কর্মী ভাটিয়ারী বিএমএ গেট এলাকার আবুল বাশারের ছেলে মো. ফরিদ উদ্দিন (৩৬), নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া এলাকার চিকি রোঙ্গী লকরেটের ছেলে রতন লকরেট (৪৫), নোয়াখালীর মাইজদী থানার অলিপুর এলাকার মকবুল আহমেদের ছেলে আবদুল কাদের (৫৮) ও ময়মনসিংহ জেলার সেলিম রিচিল।
এ ছাড়া বিস্ফোরণে উড়ে আসা লোহার প্লেটের আঘাতে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু দূরে থাকা শামছুল আলম ও সালাহউদ্দিনও মারা যান। শামছুল আলম (৫৬) সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী জাহানাবাদ এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে এবং মো. সালাহ উদ্দিন (৩০) লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার চর লরেন্স এলাকার মহিদুল হকের ছেলে।
সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ২৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসন। গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযানের পর সেদিনের মতো অভিযান শেষ করা হয়। গতকাল সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটানা অভিযানের পর আর কোনো হতাহত নেই ও আর কোনো বিস্ফোণের আশঙ্কা নেই এবং আগুনও পুরোপুরি নিভে গেছে নিশ্চিত হয়ে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা সবধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছেন। একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট পরিচালনার জন্য যে সব প্রতিষ্ঠানের সনদ প্রয়োজন, সবগুলোই ছিল।
নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তারা বলছেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সেবার জন্য তারা সবধরণের সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন। শ্রম আইন ও সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তাদের সকল প্রাপ্য শিগগির বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি অনুদানের পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। বিস্ফোরণে কারাখানার আশপাশে যে সব ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোও সংস্কার করে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিস্ফোরণে আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং নিহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নিহতদের পরিবারকে আরও দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানায়।