আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে কোস্টগার্ডকে জানিয়েছিল মার্কিন নৌবাহিনী। কারণ এটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরপরই বিস্ফোরণ সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দ শনাক্ত করেছিল তারা। তথ্যটি জানিয়েছেন মার্কিন নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা। খবর বিবিসির।
সিবিএস নিউজের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, বিস্ফোরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দ শনাক্ত হওয়ার তথ্য মার্কিন নৌবাহিনী কোস্টগার্ডকে দ্রুতই জানিয়েছিল। তবে সিবিএস নিউজ তথ্যটি দিলেও মার্কিন নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি।
তথ্যটি আগে কেন প্রকাশ্যে বলা হয়নি, তাও স্পষ্ট নয় বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।
গত রোববার (১৮ জুন) ওশানগেটের সাবমারসিবল ডুবোযান টাইটান পাঁচ আরোহী নিয়ে কানাডা উপকূল থেকে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যায়। এর ঠিক পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে এটিকে খোঁজার সব রকমের চেষ্টা চালায় মার্কিন কোস্টগার্ডের পাশাপাশি কানাডার কোস্টগার্ড সদস্যরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী জাহাজের সমন্বয়ে চলে শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযান। শেষ সময়ে এসে বাড়ানো হয় অভিযানের ব্যাপ্তিও। আটলান্টিকের তলদেশের প্রায় ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চালানো হয় চূড়ান্ত পর্বের অভিযান। একই সঙ্গে আনা হয় পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ভিক্টর ৬০০০ নামে রোবোটিক্যালি অপারেটেড একটি ফরাসি ভেহিক্যাল। এটি ডুবোযানটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে বাধাদানকারী কোনো কিছু শনাক্ত হলে সেটিকে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম। এ অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় মার্কিন কোস্টগার্ড।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় তারা।
মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার জানান, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে টাইটান সাবমেরিনের বড় পাঁচটি টুকরা পাওয়া গেছে। সাবমেরিনের সব আরোহীই মারা গেছেন বলেও জানান তিনি।
টাইটানে যারা ছিলেন
প্রাথমিকভাবে ওই সাবমেরিনে থাকা পর্যটকদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, এটিতে পাইলট এবং একজন ক্রু ছাড়াও তিনজন পর্যটক ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিংও। তিনি একটি অ্যাভিয়েশন ফার্মের মালিক। এর আগে পর্যটক হিসেবে মহাকাশও ভ্রমণ করেছেন হামিশ। এ মিশনে যাওয়ার আগে রোববার নিজের ইন্সটাগ্রামে নিজেই সেই খবর দিয়েছিলেন।
এছাড়া সাবমেরিনটিতে পাকিস্তানি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ ছিলেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তার পরিবার জানিয়েছে, তাদের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য তারা জানেন না।