নিজস্ব প্রতিনিধি:
বুলডেজার দিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব ও সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কাজী মনিরুজ্জামানসহ ২৫ জন পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীর নামে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সদর উপজেলার শাকরা কোমরপুর এলাকার বৈচনা গ্রামের মোঃ মাদার সরদারের ছেলে মোঃ ওবায়দুল্যাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মোঃ মায়নুদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামীদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন, তৎকালীন সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইনামুল হক, তৎকালীন সদর থানার এস.আই মিজানুর রহমান, আবুল হাসেম, হায়াৎ মাহমুদ, শরীফ মিয়াজি ও হেকমত আলীসহ পুলিশের ১৫ জন এবং ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আব্দুল গফুর, সাধারন সম্পাদক আনারুল ইসলাম স্থানীয় আওয়ামীলীগের দশ জন নেতা-কর্মী রয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাতক্ষীরার আইনজীবি সমিতির সহ-সভাপতি এড. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারী এ মামলার আসামীদের পরস্পর যোগসাজশে বাদী বৈচনা গ্রামের ওবায়দুল্যাহর বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে বুলডেজার দিয়ে তার বাড়ি ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাদী ওবায়দুল্যাহ এ মামলাটি দায়ের করতে পারেননি। তাই র্দীঘ ১৫ বছর পর কোটি টাকার ক্ষতিপূরণসহ আসামীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানিয়ে তিনি আজ সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক মোঃ মায়নুদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মামলার বাদী ওবায়দুল্যাহ জানান, ১জানুয়ারী ২০১৪ তারিখে তার বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে লুটপাট করে তৎকালিন ফ্যাসিস্ট সরকারের পেটুয়া বাহিনী। যার নেতৃত্বে ছিলেন, তখনকার সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পরই তার আস্থাভাজন তৎকালীন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরও দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে বহাল তরিয়াতে রয়েছেন শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচন ও খুন গুমে অংশ নেওয়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব ও সাতক্ষীরার তৎকালীন জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। তিনি আরো বলেন, নাজমুল আহসানের সময়ে শুধু সাতক্ষীরা জেলাতেই রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। এদের সবাই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন।