হোম খুলনাসাতক্ষীরা সাতক্ষীরায় ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত সম্পন্ন

সাতক্ষীরায় ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত সম্পন্ন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 90 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে স্কুল ফান্ডের অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার স্কুলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত সম্পন্ন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল।

তদন্ত শুরুর পূর্বে প্রধান শিক্ষক মুকুলের ভাই বাবুর নেতৃত্বে শতাধিক ব্যক্তি তদন্ত কার্যক্রম ব্যহত করার চেষ্টা করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরবর্তীতে অভিযোগকারী শিক্ষকদের বক্তব্য গ্রহণসহ তদন্ত কার্যক্রম শুরুর একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে বলেন আমি কোন জবাব দিতে পারবো না। আদালতের মাধ্যমে আসেন। যদিও তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং তদন্ত সম্পন্ন করেন।

এদিকে, বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেশন চার্জ, বেতন ও পরীক্ষার ফি আদায় করে ব্যাংক একাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে গচ্ছিত রাখেন। পরবর্তীতে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে ওইসব অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ৬ লক্ষ টাকার একটি এফডিআর কার্যনির্বাহী কমিটি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই নিজের ক্ষমতা বলে তিনি উত্তলন করে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের সামনে ১০টি দোকান ঘরের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক ১১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অগ্রিম জামানত হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু এই জামানতের টাকা বিদ্যালয়ের কোন ব্যাংক একাউন্টে না জমা দিয়ে তিনি নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

শিক্ষকরা আরো জানান, ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ নতুন অ্যাডহক কমিটি হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক কোন রেজুলেশন ছাড়াই ২০২৫ সালের ১৬ এপ্রিল জনতা ব্যাংক ব্রহ্মরাজপুর শাখা হতে বিদ্যালয়ের জেনারেল ফান্ডের এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন এবং ২০২৫ সালের ২৬ জুন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরকারি টিউশন ফি এর দুই লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা অগ্রণী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা হতে উত্তোলন করেন। এছাড়াও অর্ধ বার্ষিক পরিক্ষার পূর্বে ২০২৫ সালের জুন মাসে ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত বেতন, পরীক্ষার ফি ও সেশন চার্জ বাবদ প্রায় ছয় লক্ষ ২০ হাজার টাকা আদায় করলেও বিদ্যালয়ের জেনারেল ফান্ডে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। অথচ নুতন এডহক কমিটি হওয়ার পর এ সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করলেও সভাপতি এই বিষয়ে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

একজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টের অপারেটর হিসেবে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে জেনারেল ফান্ডের টাকা উত্তোলন করবে। কিন্তু অপারেটর হিসেবে ২০২৩ সাল থেকে কমিটির কোন সদস্য না হয়েও তপন কুমার সাহা নামে এক অভিভাবক সদস্য ও প্রধান শিক্ষক যৌথভাবে স্বাক্ষর করে জনতা ব্যাংক থেকে অবৈধ ভাবে টাকা উত্তোলন করে আসছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরকারি টিউশন ফি এর টাকা সাতক্ষীরা অগ্রণী ব্যাংক থেকে শেখ আব্দুল আহাদ (যিনি বর্তমান কমিটির কোন সদস্য নন) নামে একজনের স্বাক্ষরে টাকা উত্তোল করেন প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নীতিমালা লঙ্ঘন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তে আমার অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে। সমস্যা নেই। এছাড়া তার ভাইয়ের নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার ভাই একজন অভিভাবক হিসেবে অন্যদের সাথে আসতে পারে। কিন্তু সে কোন বিশৃঙ্খলা করেনি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, উভয়পক্ষের বক্তব্য নিয়েছি। কাগজপত্রে কিছু সমস্যা আছে। তবে, উভয় পক্ষই ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। সেদিন তারা কাগজপত্র দেবেন। এর আগে আর কোন বক্তব্য আমি দিতে পারবো না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন