হোম খুলনাসাতক্ষীরা সাতক্ষীরা সদরের খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে খাদ্য শস্য বিতরনের অভিযোগ

সাতক্ষীরা সদরের খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে খাদ্য শস্য বিতরনের অভিযোগ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 46 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুলের বিরুদ্ধে খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে খাদ্য শস্য বিতরনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে তার বাবা মুক্তি যোদ্ধা না হয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরী নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে, তিনি খাদ্যশস্য বিতরনে কিছু মিছটেক হতে পারে বলে জানান। এছাড়া তার বাবা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে তিনি দাবী করেন।

জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্থাপনায় মজুদকৃত বস্তার গায়ে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” শ্লোগান সম্বলিত লেখাটি অমোছনীয় কালির সাহায্যে ঢেকে ফেলে (মুছে ফেলে) গুদাম থেকে খাদ্য শস্য বিতরনের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত গত ২৭ নভেম্বর তারিখে ১৩.০১.০০০০.০৮১.৩২.০০১.২৪.২৭৮৭ স্মারকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। ওই প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে যারা এ আদেশ পালনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অথচ প্রজ্ঞাপন জারি করার পরও সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুল এই প্রজ্ঞাপনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বস্তার গায়ে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” শ্লোগান সম্বলিত লেখাটি কোন প্রকার না মুছেই বস্তাভর্তি এসব চাল সাতক্ষীরা শহরের ৭টি স্থানের খোলা বাজারের (ওএমএস) ডিলারদের মাঝে বিতরন করছেন। ডিলাররা সেগুলো স্ব স্ব স্পটে নিয়ে সাধারন জনগনের মাঝে বিতরন করছেন।

সরজমিনে আজ মঙ্গলদপুরে এই প্রতিবেদক রাজারবাগান সরকারী কলেজ রোডস্থ কাটিয়া সরকার পাড়ার ওএমএস ডিলার খালিদ এন্টার প্রাইজে গিয়ে দেখেন সেখানে মজুদ রাখা ৭/৮ বস্তা চাল রয়েছে। প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি চাল রয়েছে। এসব বস্তার প্রতিটির গায়ে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” শ্লোগান সম্বলিত লেখা স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে। যা কোন কালি দিয়ে মুছে ফেলা হয়নি।
এছাড়া, সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুলের বিরুদ্ধে তার বাবা যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনয়নের পাঁচবাকাবরশী গ্রামের আব্দুল করিমের নামে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরী নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাছাই বাছাই কমিটিও মতামত দিয়েছেন তার বাবা কোন মুক্তি যোদ্ধা নয়। এছাড়া বিগত ২৫.০৩.২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রানালয় থেকে যে গেজেট প্রকাশ হয় এতে তার বাবার কোন নাম নেই। যা ওই সময়ে দৈনিক সমকাল, দৈনিক জনকন্ঠ, গ্রামের কাগজসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকার নিউজও প্রকাশিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরী করার অভিযোগে বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগও করেছেন সাতক্ষীরার সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। অথচ তিনি অমুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়ে বিগত পতিত সরকারের আমল থেকে এখনও বহাল তরিয়তে চাকরী করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরার সুশীল সমাজের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষকদলের সাবেক আহবায়ক মোঃ আহসানুল কাদির স্বপন জানান, পতিত সরকারের দোসর সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুলের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেটে চাকরী নেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা তিনি লোক মুখে শুনেছেন। তবে, সরকারের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে সর্বশেষ তিনি যোটা করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্থাপনায় মজুদকৃত বস্তার গায়ে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” শ্লোগান সম্বলিত লেখাটি অমোছনীয় কালির সাহায্যে ঢেকে ফেলার কথা থাকলেও তিনি সেটা মানছেন না। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি এসময় তার অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নতুন করে যে খাদ্যশস্য কেনা হবে সেগুলোতে ওই লেখা থাকবেনা। তবে, যে গুলো মজুদ রয়েছে সেগুলো মুছে ফেলে বিতরনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তো ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বস্তার উপর ছিল মেরে ওই লেখা গুলো ঢেকে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, শতভাগ সম্ভব হচ্ছেনা। কিছু মিছটেক হতে পারে। তবে, আপনি বলছেন যখন এবার থেকে দেখে দেয়া হবে। এছাড়া তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি মুক্তি যোদ্ধা কোটায় চাকরী করছেন কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সঠিক নয়। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। বিগত ১০.০২.১৯৭২ সালে আমার বাবা আতাউল গণি স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফেকেট পেয়েছেন। মুক্তি যুদ্ধের পর আমার বাবা এক বছর পুলিশে চাকরীও করেছেন বলে তিনি দাবী করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন