হোম অন্যান্যসারাদেশ সাত মাস পর পর্যটকদের জন্য খুলল সুন্দরবনের দ্বার

সাত মাস পর পর্যটকদের জন্য খুলল সুন্দরবনের দ্বার

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 91 ভিউজ

খুলনা অফিস :

করোনা সংকটের কারণে দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ থাকার পর বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের দ্বার পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার প্রথম দিন ১৬-১৭টি জাহাজে সাত-আট ’শ পর্যটক সুন্দরবনের পর্যটক স্পটগুলোতে প্রবেশ করেছে বলে ট্যুর অপারেটর সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে, পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের প্রবেশ দ্বার খুলে দেওয়ায় দীর্ঘদিন পর সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৯ অক্টোবর বন ও পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবনকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়। সভায় আসন্ন পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে সুন্দরবনকে উন্মুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের প্রবেশ দ্বার খুলে দেওয়ার জন্য সুন্দরবন রেঞ্জ ও বিভাগীয় পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সূত্রমতে, করোনা ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গত ১৯ মার্চ পুরো সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবন জুড়ে এ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। সুন্দরবনের নয়টি পর্যটন এলাকায় পর্যটন মৌসুমে (নভেম্বর থেকে মার্চ) কোনো কোনো দিন ৪৫ হাজারেরও বেশি পর্যটক অবস্থান করে থাকে। ফলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় চরম দুর্ভোগে পড়েন বনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে থাকা দর্শনার্থীরা। এছাড়া চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে ট্যুর অপারেটর সহ সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় সুন্দরবন উন্মুক্ত করে দিতে তারা মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সভাপতি মো. মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, রোববার প্রথম দিনে পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবন মিলিয়ে ১৭-১৮টি জাহাজে অন্তত ৭০০-৮০০ পর্যটক সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। এ সব পর্যটকদের জন্য সরকারি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মনিটোরিং করা হচ্ছে। তিনি জানান, প্রত্যেক জাহাজে পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও মাস্ক সহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম রাখা হয়েছে।
সুন্দরবন (পশ্চিম) বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, রোববার থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, একটি জাহাজে ৫০ জনের বেশি একজন পর্যটকও নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বনে প্রবেশের জন্য পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনে প্রবেশে পর্যটকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। বনে প্রবেশের আগে অবশ্যই পর্যটকদের মাস্ক পরিধান করতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্যও বন বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সুন্দরবন বন বিভাগ) মো. মঈনুদ্দীন খান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কোনো ট্যুর অপারেটর বা পর্যটক স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন