হোম খুলনাযশোর সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের উপর কাঠের ব্রিজের উদ্বোধন

সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের উপর কাঠের ব্রিজের উদ্বোধন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 30 ভিউজ
পরেশ দেবনাথ:
যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের উপর একটি কাঠের ব্রিজ উদ্বোধন করা হয়েছে। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন ও সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ থেকে ২৫ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি সাময়িক লাঘব হলো কপোতাক্ষ নদের উপর কাঠের ব্রিজ পুনঃসংস্কারের মাধ্যমে। গত ২১ জুলাই-২৫ সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার মানুষ। সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাঁকোটি মেরামতের কথা জানিয়েছেন। আজ তিনি তাঁর কথা পুরণ করলেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর-২৫) দুপুরে কপোতাক্ষ নদের উপর আনুষ্ঠানিকভাবেএকটি কাঠের ব্রিজ উদ্বোধন করলেন, প্রধান অতিথি কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রেকসোনা খাতুন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন খান, যশোর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মজনু হোসাইন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাজী মনোয়ার আবু তাহের বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম, যুবদল নেতা শাহিনুর রহমান, সার্বিক তত্ত্বাবধানে দায়িত্বে  থাকা আকবর হোসেন প্রমূখ। ব্রিজটি উদ্বোধনের ফলে দুই উপজেলার হাজারও মানুষের যাতায়াত সহজ হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে বলে স্থানীয়রা আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কেশবপুর, তালা ও কলারোয়া উপজেলার হাজারও মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে কপোতাক্ষ নদের বাঁশের সাঁকোটি। যার উপর দিয়ে প্রতিদিন কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি, শেখপুরা, রেজাকাটি, বগা, মহাদেবপুর এবং তালা ও কলারোয়া উপজেলার সারসা, সরুলিয়া,  সেনেরগাতি, ধানদিয়াসহ প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন। গত ২১ জুলাই সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার মানুষ।
সাগরদাঁড়িতে পর্যটন কেন্দ্রসহ রয়েছে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ পথচারীদের চলাচলে বাঁশের সাকোটি ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া, সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার সাগরদাঁড়িতে হাট বসে। এ হাটে ওপারের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বেচাকেনা করে থাকেন। এ ছাড়া প্রতিদিন সাগরদাঁড়িতে অনেক পর্যটক আসেন। এ কারণেই বাঁশের সাঁকোটির গুরুত্ব অপরিসীম ছিল। এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাত আলী জানান, সম্প্রতি অবিরাম বর্ষণে কপোতাক্ষ নদেও স্রোত অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। উজান থেকে নেমে আসা শেওলা ও কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে দুই পারের হাজারও মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আহমেদ রাজু বলেন, চলতি বছরের শুরুতে মধুকবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে দুই উপজেলার মানুষের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করা হয়েছিল। উজানের বিপুল পরিমাণে শেওলা আটকে সাঁকোটি আবারও ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দু’পারের ২৫ গ্রামের মানুষের পারাপারের ভরসা ছিলো কপোতাক্ষ নদের ওপর ওই সাঁকোটি। কিন্তু সেটা ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন দুপারের মানুষ। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণে ম্যাপসহ কারিগরি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশলী দফতরের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিলো। সেতু নির্মাণে কোনো অগ্রগতি হয়নি। একটি ব্রীজের বিশেষ গুরুত্ব বহন করায় স্থায়ীভাবে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন মধুপ্রেমীসহ দুই পড়ের এলাকাবাসী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন