হোম ফিচার সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ স্কুলের ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষিকা

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ :

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেধড়ক পেটালেন ওই বিদ্যালয়েরই শিক্ষিকা। অর্ঘ্য ঘোষ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যায়নরত।ছাত্র অর্ঘ্য ঘোষ জানায়, বুধবার অন্যান্য দিনের ন্যায় বাংলা ক্লাসে পাঠদানের জন্য আসেন শিক্ষিকা সাখী সুলতানা ম্যাডাম।শ্রেণীকক্ষে ঢুকেই ম্যাডাম সকলের কাছে বই আছে কিনা চেকিং করে। এক পর্যায়ে আমার কাছে এসে দেখতে পান আমার সামনে বাংলা বইয়ের “তথ্য প্রযুক্তি” গল্পটি বের করা রয়েছে।

ম্যাডাম ভেবেছেন আমি মনে হয় তথ্যপ্রযুক্তি বইটি বের করে রেখেছি। তাই রেগে উনি আমাকে প্লাস্টিকের বেতের লাঠি দিয়ে দুই হাতে, পিঠে এবং পায়ে অনেকগুলো বাড়ি মারেন।ফলে আমার শরীরে বেতের দাগ দৃশ্যমান হয় ও বেশ কিছু স্থানে রক্ত জমাট বেধে যায়। এটা বাংলা বইয়ের “তথ্যপ্রযুক্তি” গল্প ; তথ্যপ্রযুক্তি বই নয়, বলেও ম্যাডামকে আমি বোঝাতে পারিনি। অর্ঘ্য কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মাহাতাব উদ্দিন কলেজ পাড়া নিবাসী অরুপ কুমার ঘোষের ছেলে।অর্ঘ্যের কাকা উজ্জ্বল কুমার ঘোষ জানান,আমাদের সন্তানকে স্কুল শিক্ষিকা যেভাবে মেরেছেন এভাবে একটি পশুকেও মারা হয় না। আমি একজন শিক্ষক হয়ে ওই শিক্ষিকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষিকা সাখী সুলতানার সাথে তার ০১৭১৯৬২৮৫৭৮ নাম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতার সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মধুসুধন সাহা জানান , সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এমন একটি ঘটনা আমি শুনেছি। ঘটনা কি ঘটেছিল ভালোভাবে সেটা আমি আগে জানব । তবে কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিক কিংবা মানসিক নির্যাতন করা শিক্ষা নীতি বহির্ভূত একটি কর্মকাণ্ড।এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন কোনো ঘটনা নয়। শারীরিকের পাশাপাশি প্রাইভেটের জন্য মানসিকভাবেও শিক্ষার্থীদেরকে নির্যাতন করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রাইভেটের রমরমা বাণিজ্য শুরু করেছেন এইব বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক। তাই এখন সর্বমহলে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন