স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক:
সারাবছর ধনেপাতা পাওয়া গেলেও শীতে একটু কম দামে মিলে। তাই এই সময় বেশি পরিমাণে এই পাতা খাওয়া হয়। অসাধারণ পুষ্টিগুণে ভরপুর এই পাতা রান্নায় ব্যবহারের ফলে খাবারের স্বাদ বেড়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন খাবারে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে সবুজ রঙের সুন্দর এই পাতা।
ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম Coriandrum sativum এবং এটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। বাংলাদেশে সাধারণত সর্ব প্রকার ধনে বীজ খাবারের মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও শীতে নিয়মিত ধনিয়া খাওয়ার অসাধারণ গুণাগুণ রয়েছে।
দেশের অধিকাংশ মানুষই ধনেপাতার উপকারিতা জানেন না। মূল্যবান এই পাতায় ১১ জাতের ইসেনশিয়াল অয়েল, ভিটামিন, মিনারেল, ৬ ধরনের অ্যাসিড (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড যা ভিটামিন ‘সি’ নামেই বেশি পরিচিত) ও অন্যান্য উপকারী পদার্থ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ফাইবার, ম্যাংগানিজ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ফসফরাস, ক্লোরিন এবং প্রোটিন। এতোসব জানার পরও অবশ্যই এই পাতাকে সাধারণ কোনো পাতা ভাববেন না।
এবার তাহলে ধনেপাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
চোখের পুষ্টি: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে এই ধনেপাতায়। দেহের সংযোগকারী টিস্যু গঠনে এবং সংরক্ষণে সহায়তা করে এই পাতা। ধনেপাতা রক্তনালীগুলিকে নমনীয় করে এবং চোখকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এই পিগমেন্ট শরীরে ভিটামিন-এ তৈরি করতে সহায়তা করে। তাই ধনেপাতা নিয়মিত খাওয়া উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে ধনিয়া। এটি বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে থাকে, যা ফ্রি র্যাডিওক্যালগুলোর জন্য সেলুলার ক্ষতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলো প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
হার্ট সুস্থ রাখে: উচ্চ রক্তচাপ এবং এলডিএল খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মনে করা হয় যে, ধনেপাতা নিষ্কাশন মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে থাকে। ধপোতা খাওয়ার ফলে সোডিয়াম কমাতে সহায়তা করে এবং এতে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে থাকে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: ধনে বীজ থেকে উত্তোলন করা তেল মানবদেহের জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর। এই তেল হজমকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে। এক সমীক্ষায় দেখে গেছে, ধনেযুক্ত ভেষজ ঔষধের ৩০ ফোঁটা নিয়ম করে দিনে তিনবার খাওয়ার ফলে পেটের ব্যথা, ফোলাভাব এবং অস্বস্তি হ্রাস পায়।
সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই: ধনেপাতার মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ রয়েছে। এটি সংক্রমণ ও খাদ্যজনিত ছোট-খাটো সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ধনে মিশ্রিত ডোডেনসাল সালমনেল্লার মতো ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে পারে।
ব্যথা নিরাময়: অনেকে বাত ও অস্টিওপরোসিসজনিত সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাদের ক্ষেত্রে ধনেপাতার সুপারিশ করে থাকেন। শীতের সময় হাড়ের জন্য অনেক নিয়মিত খাবারে বা অন্য কোনোভাবে ধনেপাতা খাওয়া উচিত। ক্যালসিয়াম এবং খনিজগুলোর হাড়ের পুনঃবৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ক্ষয় রোধে সহায়তা করে।