শিক্ষা ডেস্ক :
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সংঘর্ষ চলাকালে সাউন্ড গ্রেনেড ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী-শিক্ষক আহত হয়েছেন।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সে সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড, শর্টগানের গুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পরে আইআইসিটি ভবন থেকে তালা ভেঙে উপাচার্যকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন।
এর আগে দুপুর ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষা ভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সব বিভাগের প্রধান, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনার পরিচালক এবং প্রক্টর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা ছাত্রীদের দাবি মেনে নেন এবং সাত দিনের সময় চান কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা না মানায় শিক্ষকরা ওই স্থান ত্যাগ করেন।
এরপর আন্দোলনকারীরা শিক্ষকদের পেছন পেছন স্লোগান দিয়ে চেতনা ৭১ এর সামনে থেকে উপাচার্য ভবনের দিকে এগিয়ে আসেন।
এ সময় উপাচার্য কার্যালয় থেকে নামলে তারা উপাচার্যের পথ অবরোধ করে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের সহায়তায় উপাচার্যকে আইআইসিটি ভবনের দিকে নিয়ে যাবার সময় আন্দোলনকারীদের হামলার শিকার হয় উপাচার্যসহ কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক ও সংবাদকর্মীরা।
পরে উপাচার্য আইআইসিটি ভবনে গেলে আন্দোলনকারীরা ওই ভবনের সদর দরজায় তালা মেরে দেন এবং কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয় না।
এর আগে রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগের দাবিসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করে রাখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
পরে দুপুর পৌনে তিনটার দিকে গোল চত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবির, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মহিবুল আলম।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে হলের গুণগত মান উন্নত এবং অব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। এ জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে সাত দিনের সময় চান। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি না মানার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বর্ধিত সময় দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন এবং তখন শিক্ষার্থীরা তাদের সামনে ধিক্কার ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের পিছু নেন এবং অর্জুন তলা থেকে ফিরে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গেলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনকে সামনে পান। তখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পিছু নিয়ে ‘ধিক্কার ধিক্কার’ স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় উপাচার্যকে নিয়ে উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইসিটি ভবনে ঢুকলে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন।
