হোম জাতীয় শান্তিপূর্ণ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও অশান্ত নির্বাচন বর্জনকারী দল: সিইসি

শান্তিপূর্ণ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও অশান্ত নির্বাচন বর্জনকারী দল: সিইসি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 112 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

নির্বাচন বর্জনকারী দল শান্তিপূর্ণ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও অশান্ত হয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা জানান তিনি।

সিইসি বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচন প্রশ্নে, রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ রয়েছে। তবে সংঘাত ও সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় নাশকতা ও সহিংসতা একেবারেই হচ্ছে না তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। নির্দোষ, নিরীহ, নিষ্পাপ শিশু, নারী, পুরুষের মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। চলমান এহেন পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান ও অবসান প্রয়োজন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিশ্বাস করেন আলাপ-আলোচনা ও গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটের নিরসন সম্ভব। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পন্থায় জনগণকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো। এতে জনমনে আস্থা সঞ্চারিত হয়েছিল। কিন্তু ঘোষিত হরতাল অবরোধের মধ্যে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে। ট্রেন, যানবাহন, নির্বাচন কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। কারা দায়ী সেটি আমাদের বিবেচ্য নয়। তবে নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।

সিইসি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় সবার সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়ে থাকে। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়। তাতে জনমতেরও শুদ্ধতর প্রতিফলন ঘটে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে সংহত ও টেকসই হয়। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন হয়।

তার মতে, নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মত-বিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। নির্বাচনী সার্বজনীনতা প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। এরপরও ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সর্বমোট ১৯৭০ জন প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।

সিইসি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন কেবল ভোটগ্রহণ শুরুর অপেক্ষা। অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও ভোটারকে নির্বাচন বিষয়ক বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে।

সিইসি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন কেবল ভোটগ্রহণ শুরুর অপেক্ষা। অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও ভোটারকে নির্বাচন বিষয়ক বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে।

‘‘নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদেরও আইন ও বিধি-বিধান প্রতিপালন ও প্রয়োগ করে সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক বিষয়ে আরোপিত দায়িত্বপালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, শৈথিল্য, অসততা ও ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না’’, যোগ করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।

নির্বাচন বিষয়ক আইন ও বিধি-বিধান বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে পারিপার্শ্বিক শৃঙ্খলাসহ প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সবার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিক বাতিল করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। জনগণকেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ধরনের নির্বাচনী অনিয়ম- অনাচার প্রতিহত করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন