খেলার সংলাপ :
‘রিটার্ন টিকেট হাতে লইয়া আইসাছি এই দুনিয়ায় / টাইম হইলে যাইতে হবে, যাওয়া ছাড়া নাই উপায়’। সেই অনুপায়ের পায়ে বেড়ি বাঁধতে ক্যানসারের সঙ্গে লড়েছেন বহুদিন। অবশেষে ভক্তদের কাঁদালেন এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্টো, যিনি পেলে নামে পরিচিত। শুধু ভক্ত নয়, নিজ জন্মদাত্রীকেও কাঁদালেন ফুটবলের এই কিংবদন্তি।
কিশোর পেলেকে মা সেলেস্তেই জুগিয়েছিলেন ফুটবল অনুপ্রেরণা। আর বাবা দন্দিনহো শিখিয়েছেন কৌশল। দুয়ে মিলে অভেদ্য শৈলী গড়ে ওঠে কিশোর এডসন আরান্তেসের মধ্যে। প্রকাশ ঘটে ‘পেলে’ হিসেবে। অর্জন করেন তিনটি বিশ্বকাপ। হয়ে উঠেন কিংবদন্তি।
গত ২০ নভেম্বর মা সেলেস্তের ১০০ বছর পূর্ণ হয়। শৈশব থেকে এ পর্যন্ত পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে পেলে টুইট করেছিলেন, ‘অল্প বয়স থেকেই আমার মা আমাকে ভালোবাসা এবং শান্তি দিয়ে এসেছে। আজ এই দিনটি উদিযাপন করতে পেরে আমি ধন্য। আমার পাশে প্রতিটি দিন থাকার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ মা।’
মা পাশে থাকলেও হারিয়ে গেলেন ছেলে। তবে হারান শুধু শারীরিক, মূলত পেলে বেঁচে রইলেন পৃথিবীর কোটি মানুষের বুকে।
পুত্রবিয়োগের দিনে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা এক গল্প স্মরণ করেছে। বলা হয়েছে, ‘পেলে ১৯৬৬ সালে নিজ শহর ছেড়ে ইংল্যান্ডে খেলতে গেছেন ফিফা বিশ্বকাপ। একদিন টেরেসো পোলিসে ব্রাজিলের জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করছিলেন পেলে। হঠাৎ সেখানে হাজির মা সেলেস্তে। চোখের জলে অনুশীলন ভাসিয়ে জড়িয়ে ধরেন মাকে।’
সে বার পেলেকে অনুপ্রেরণা দিতেই ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন মা, কিন্তু পেলের বিশ্বকাপ জেতা হয়নি।
ব্রাজিলের অন্যতম সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ সম্প্রতি পেলের মাকে ‘ব্রাজিলিয়ান মাদার অফ দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে।
সেলেস্তের জন্ম ব্রাজিলের মিনাস গেরাইসের ট্রেস কোরাকোয়েসে। তবে, পেলে যখন ছোট, তখন তারা বাউরুতে চলে যায়। আর সেখানেই মায়ের স্বপ্নপূরণে উৎসাহিত হয়ে খুব অল্প বয়সেই ফুটবলে সাফল্য পান পেলে।