অনলাইন ডেস্ক:
কক্সবাজার উপকূলবর্তী সাগরে তিনদিন অভিযান চালিয়ে ‘গোলাগুলির পর’ লুণ্ঠিত মালামাল এবং অস্ত্র ও গুলিসহ ছয় জলদস্যুকে আটক করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন: কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশিখালী ইউনিয়নের মাহমুদ উল্লাহর ছেলে মো. বাদশা (২৭) ও মুসালিয়া সিকদার পাড়ার রহিম উল্লাহর ছেলে মো. মারুফুল ইসলাম (২২) এবং একই উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের জুলেখাবিবির পাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইলের ছেলে রায়হান উদ্দিন (২২), পেঁচারপাড়ার মৃত কবির আহমদের ছেলে এরশাদুল ইসলাম (২০) ও সাহারুম সিকদার পাড়ার মো. ইউনুছের ছেলে মো. রাফী (১৯)। আটক অপরজন হল চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার নারিকেলতলা এলাকার মো. আবু বক্করের ছেলে মো. আল-আমিন (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উপকূলের পয়েন্ট কেন্দ্রিক জলদস্যুদের কয়েকটি দল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী এক জেলে র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন তার ট্রলার জলদস্যুতার শিকার হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী ওই জেলে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সাগর উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এতে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে র্যাব জানতে পারে যে, ১০ থেকে ১২ জনের একটি জলদস্যু দল ট্রলারযোগে গত ২১ জানুয়ারি ডাকাতির উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে যায়। জলদস্যু দলটি গত ২২ জানুয়ারি সাগরে মাছ ধরার একটি ট্রলার ডাকাতি সংঘটন করে।’
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ভুক্তভোগী জেলের তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব ২৫ জানুয়ারি থেকে বাঁকখালী নদীর মোহনা ও মহেশখালী উপকূলের মোহনায় অভিযান শুরু করে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহেশখালী উপকূলবর্তী সাগরে সন্দেহজনক একটি ট্রলার দেখতে পেয়ে র্যাব সদস্যরা থামার জন্য নির্দেশ দেন। এতে জলদস্যুরা র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলি ছুড়তে শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা কয়েকটি গুলি ছোঁড়ে। একপর্যায়ে জলদস্যুদের ট্রলারটি র্যাব সদস্যরা জব্দ করতে সক্ষম হয়।’
‘পরে ট্রলার থেকে ৬ জলদস্যুকে আটক করতে সক্ষম হলেও ৪-৫ জন সাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারটি তল্লাশি চালিয়ে এবং আটকদের হেফাজত থেকে দেশীয় তৈরি ৩টি বন্দুক, ১৩টি গুলি এবং ৩টি ধারালো দা পাওয়া যায়।’
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পেকুয়া উপজেলার নুরুল আবছার ওরফে বদু ও জালাল আহমদ এবং কুতুবদিয়া উপজেলার মো. ইসহাক ওরফে ইসহাক মেম্বারের ছত্রছায়ায় নিজেদের মালিকানাধীন ট্রলার যোগে গত এক সপ্তাহ আগে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠায়। পরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী এলাকার জনৈক কালু কোম্পানির মালিকাধীন ট্রলারটির জেলেদের মারধর করে ডাকাতদলের কব্জায়। ডাকাতদল নিজেদের ট্রলারটি সাগরে নিরাপদ স্থানে রেখে কালু কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারটি নিয়ে লুণ্ঠন কাজ শুরু করে।’
আটকরা সংঘবদ্ধ জলদস্যু দলের সদস্য এবং তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জলদস্যুতাসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মহেশখালী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।