বিদেশের মাটিতে ধীরে ধীরে শক্ত হয়েছে বাংলাদেশের ভিত। খুব কষ্ট করে স্থায়ী মিশন স্থাপনসহ বিভিন্ন দূতাবাসের উন্নয়ন করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (২৭ মে) পল্টন টাওয়ারে সাবেক অর্থমন্ত্রী ড. আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এক সময় চা খাওয়ানোর জন্য রাষ্ট্রদূতদের কোনো বরাদ্দ ছিল না। দূতাবাস বা মিশন পরিচালনায় যে বরাদ্দ হতো তাও ছিল অপ্রতূল। আজকের অবস্থা পুরো ভিন্ন। খুব ধীরে ধীরে বাংলাদেশ আজ বিদেশের মাটিতেও শক্ত অবস্থান পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে আজ আমাদের মিশন ও দূতাবাসগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ।
জাতিসংঘের মিশন কেনার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হয়। সেখানে আমাদের মিশন পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে ৩৯ হাজার ডলার ভাড়া গুনতে হতো। যা ছিল অনেক বেশি। প্রতি মাসে চেকে স্বাক্ষর করার সময় আমার গা ঝির ঝির করতো। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ৩৭ বছর পর আমরা স্থায়ী মিশন পাই।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আবুল মাল আবদুল মুহিতের টিম হয়ে কাজ করার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী আমাকে কল করেছিলেন। কিন্তু আমি তখন বাইরে দায়িত্বে ছিলাম। তখন আমি বড় ভাই আবদুল মুহিতকে নমিনেশন দেয়ার জন্য বলি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনি খুব রাগী। পরে আমি দায়িত্ব নিয়ে ভাইকে নির্বাচনের জন্য রাজি করাই।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু নির্বাচনে আমার ভাই হেরে যান। ওইটা তার জন্য ভালো হয়েছে। কারণ এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক হয়ে দেশের উন্নয়নে কী করতে চান, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন আবদুল মুহিত। আর আমি ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে, কারণ আবদুল মুহিতের ভাবনার সফল বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। যে কারণে আজকের অবস্থানে বালাদেশ।
আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, ‘আবদুল মুহিতকে আপনি নেন। তিনি দেশ ও দলের জন্য অ্যাসেট হবে।’
এরআগে, ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ১১টি দূতাবাস ও মিশন নিজস্ব জমিতে অবস্থিত। এগুলো হলো চীনের বেইজিং, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস, ভারতের নয়াদিল্লি ও কলকাতা, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, সৌদি আরবের রিয়াদ, জাপানের টোকিও, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন।
যে সব দেশে বাংলাদেশ মিশনের জন্য নিজস্ব জমি নেই, সেখানে ভাড়া করা সম্পত্তিতে মিশনের কাজ চলছে বলেও জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।