স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের অনেকেই গতকাল রাতে হয়তো ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননি। ভোর ৬টায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ। সেহরি খেয়ে মাঝে যে অল্প একটু সময়, তখন ঘুমিয়ে নেওয়ার সুযোগ খুব কম। তাই হয়তো জেগে ছিলেন অনেকেই। রাতজাগা চোখে আর্জেন্টিনার যেসব সমর্থকেরা ম্যাচটি দেখেছেন, তাঁদের ঘুম কামাই দেওয়া সার্থক।
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের এ ম্যাচে ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আর্জেন্টিনা। এ জয়ের পর আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের সমর্থকদের।
মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে গোল করার পাশাপাশি একটি গোলও করিয়েছেন ফার্নান্দেজ। ৬৮ টাচের মধ্যে যেগুলো ড্রিবলিং করেছেন তাতে শতভাগ সফল। গোলের দুটো সুযোগ তৈরি করা ছাড়াও দুটি দারুণ পাসও দিয়েছেন চেলসি তারকা। সব মিলিয়ে গোটা ম্যাচেই দারুণ খেলেছেন ফার্নান্দেজ।
জয়ের পর ফার্নান্দেজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকদের প্রতি লেখা হয়, ‘অবিশ্বাস্য সমর্থন ও বার্তাগুলোর জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ। এই জয় আপনাদেরও।’
আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের ভালোবাসা সবার নজরে আসে ২০২২ বিশ্বকাপে। সেই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলার সময় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বড় পর্দায় হাজার হাজার মানুষের খেলা উপভোগ ও মেসি, দি মারিয়াদের সমর্থনে গলা ফাটানোর ব্যাপারটি বিশ্বকাপের শুরু থেকে আর্জেন্টিনার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের এক্স হ্যান্ডলে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানানো হয়, ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ। ধন্যবাদ কেরালা, ভারত ও পাকিস্তান। আপনাদের সমর্থন দুর্দান্ত ছিল।’ ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও। ২০২৩ ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ দলকে শুভকামনা জানানো হয়েছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) পক্ষ থেকে। তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে করা পোস্টে লেখা হয়েছিল, ‘আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩-এ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যাত্রা শুরু করতে যাওয়ার আগে তাদের জন্য শুভকামনা রইল। চ্যাম্পিয়ন-সত্তাই তাদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যাবে।’
ফার্নান্দেজ নিজেও বাংলাদেশের ওপর নজর রাখেন। গত বছর জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছিলেন ফার্নান্দেজ। বিশ্বকাপজয়ী এই তারকার ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশের আমার সব ভক্তকে বলছি, আমি তোমাদের কথা শুনছি, তোমাদের জন্য প্রার্থনা করছি।’তখন তাঁর পেজ থেকে আরেকটি পোস্টে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশে থাকা যেসব মানুষ ভোগান্তির মধ্যে আছেন, তাঁদের জন্য আমার প্রার্থনা ও সহমর্মিতা রইল।’
ব্রাজিলকে বিধ্বস্ত করার দিনে বাংলাদেশকে মনে করার পাশাপাশি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের তারকা রাফিনিয়াকেও এক হাত নিয়েছেন ফার্নান্দেজ। এই ম্যাচের আগে রাফিনিয়া আর্জেন্টিনাকে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়া’র কথা বলেছিলেন। জয়ের পর এর জবাব হিসেবে ফার্নান্দেজের ফেসবুক পেজে করা পোস্টে লেখা হয়, ‘পরেরবার বিনয়ী থেকো রাফিনিয়া।’