অনলাইন ডেস্ক :
যেখানে যানজট, সেখানেই তাদের অবস্থান। ঘাপটি মেরে থাকে অপেক্ষমান যানবাহণের আশপাশে। এরপর সুযোগ বুঝে খোলা জানালার কাছাকাছি থাকা যাত্রীর মুঠোফোন, ব্যাগ, মূল্যবান জিনিসপত্র ছোঁ মেরে হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এই চক্রের সদস্যরা। বাদ পড়ে না রিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহণের যাত্রীরাও। এমন ‘ছোঁ মারা চক্র’ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ব্যস্ত নগরীর মোড়ে মোড়ে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে এ চক্রের ১৬ জন সদস্য অবশেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে ধরা পড়েছে।
আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, ওই চক্রের ১৬জন সদস্যকে গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মিজান (৩৮), আমিরুল ইসলাম বাবু (৩১), শরিফ হোসন (২৩), হৃদয় (২১), রাজ (২০), সুমন (৩২), সোহেল বাবু (২৬), হৃদয় (২২), মনিরুজ্জামান (৪০), নাজমুল (২৬), মনির (৪০), ইমরান (২০), ফারুক (২৮), আশরাফুল ইসলাম সজিব (৩১), আরিফ (১৪) ও হাসান (২০)।
এ সময় তাদের একটি সাদা-কালো নম্বরবিহীন হিরো ট্রিলার-১৬০ আর মোটরসাইকেল, ৫০টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মুঠোফোন, চারটি চাকু, দুই জোড়া স্বর্ণের দুল এবং নগদ সাড়ে ২৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এর আগে তাদের রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘অভিযানে ছোঁ মারা চক্রের হোতা ও চোরাই মাল ক্রয়-বিক্রয়কারী চক্রের সক্রিয় ১৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের কয়েকজন সদস্য বাস, প্রাইভেটকার ও সিএনজি, রিকশার যাত্রীদের কাছ থেকে থাবা ও ছোঁ মেরে মুঠোফোন, ব্যাগসহ মূল্যবান মালামাল কেড়ে নেয় এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দেশীয় অস্ত্রের (চাকুর) ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। তারা ছিনতাই করা মুঠোফোনগুলো উত্তরখানের বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার নামের একটি দোকানে বিক্রি করতেন।
ডিবিপ্রধান হারুন জানান, তারা পরস্পরের যোগসাজসে ঢাকা মহানগরীর মহাখালী, আমতলী, কাকলী, বনানী, ঢাকা গেইট, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, উত্তরা, জসিম উদ্দিন, আব্দুল্লাহপুর এবং টঙ্গী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছিনতাই করতেন।
মিজান, জয়-বাবু ও শরীফের নেতৃত্বে তারা বাস, প্রাইভেটকার ও সিএনজির যাত্রীদের কাছ থেকে থাবা ও ছোঁ মেরে মুঠোফোন, ব্যাগ ও গলার চেইনসহ মূল্যবান মালামাল কেড়ে নিয়ে চোরাইমাল ক্রয়-বিক্রয়কারী সুমন, ফারুক ও আশরাফুল ইসলাম সজিবের কাছে উত্তরখানের দোবাদিয়া সাইনবোর্ড বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারে বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের নামে উত্তরখান থানায় একটি মামলা হয়েছে।