হোম অন্যান্যশিক্ষা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ

সংকল্প অনলাইন ডেক্সঃ


২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগ করে ফল বাতিল ও সংশোধনপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করে মেডিকেল কলেজগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। তা না হলে এর প্রতিকার চেয়ে রিট করা হবে।

২৪৮ পরীক্ষার্থীর পক্ষে মঙ্গলবার (১১ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার কুরিয়ার ও ইমেইল যোগে এ নোটিশ প্রেরণ করেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭ দশমিক ৫ নম্বর কর্তন করা হবে।

আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীদের ৭ দশমিক ৫ নম্বর কর্তন করার কথা, সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে।

‘ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২ দশমিক ৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয়, সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীদের ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।’

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দু’টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দু’টি করে। সেইসঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি করা হয়েছে।’

‘ঢাকা জেলা কোটা আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছেন।’

‘এসব কারণে প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকায় ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আগামী ২২ মে হতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।’

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অর্থই হলো প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা। তাদের আজীবন লালিত আকাঙ্ক্ষা চিকিৎসাকে পেশা হিসাবে গ্রহন করা থেকে বঞ্চিত করা। সেইসঙ্গে দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২ ও ৪০ এর পরিপন্থী।’

তাই নোটিশ পাওয়ার পরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।

সুত্রঃ জাগো নিউজ ২৪

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন