আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে সশস্ত্র বিরোধীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। আজ মঙ্গলবারের (১১ এপ্রিল) এ হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম ও বিরোধীদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নোবেলজয়ী নেতা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটি বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত। সামরিক বাহিনীর শাসন ব্যাপক সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। জান্তা সরকারের ক্ষমতার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তারা এখনও দেশটির বিশাল এলাকায় কর্তৃত্ব আরোপ করতে পারেনি। এমনকি বিরোধীদের দমনে বিমান ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জান্তা বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) এক সদস্য বলেন, ‘বিরোধীদের একটি স্থানীয় কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। ঠিক সেই সময়েই বিমান হামলা চালায় সামরিক বাহিনী। এখন পর্যন্ত হতাহতের সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। আমরা এখনও ঘটনাস্থল থেকে সব লাশ উদ্ধার করতে পারেনি।’
জাতিসংঘের তথ্য মতে, জান্তা সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মিয়ানমারের কয়েক হাজার নাগরিক নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৪ লাখ বাসিন্দা। দেশটির মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের সাহায্যের প্রয়োজন।
গত অক্টোবরে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে একটি কনসার্ট জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। ওই হামলার পর এ পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক বিমান হামলা হয়েছে আজকেরটি।
জান্তা বাহিনীর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)। আজকের হামলাকে বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর চরম শক্তি ব্যবহারের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করছে তারা।
গত মাসে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী। এতে আট বেসামরিক নিহত হয়েছিলেন।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা ও সহিংসতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক এই অভিযোগ অস্বীকার করছে জান্তা সরকার। তাদের দাবি, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।