আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যে বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। রোগটির নিয়ন্ত্রণে ওই রাজ্যে অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এসব রোগ প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
মালয়েশিয়ার অন্যান্য রাজ্যগুলোর মতো পেনাংয়েও সম্প্রতি ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর জন্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা বিদেশি শ্রমিকদের কারণে রোগটির প্রাদুর্ভাব বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। আর তাই এর প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) পেনাং রাজ্যের বন্দর সেতিয়া ফনটেইনসের সেতিয়া এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে ম্যালেরিয়া বিষয়ক এক সভায় রাজ্য স্বাস্থ্য পরিচালক ড. মারুফ সুদিন বলেন, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, মিয়ানমার, পাপুয়া নিউগিনি, পাকিস্তান, ভারত, নাইজেরিয়া ও কঙ্গো প্রভৃতি দেশগুলো ম্যালেরিয়া কবলিত।
ফলে এ দেশগুলো থেকে আসা শ্রমিকদের সরকারের গৃহীত নীতি মেনে ম্যালেরিয়া স্ক্রিনিংসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে বলে জানান ড. মারুফ। এজন্য নিয়োগকর্তাদের তাদের কর্মীদের সম্পর্কে নিকটস্থ জেলা স্বাস্থ্য অফিসে তথ্য সরবরাহ করারও অনুরোধ জানান তিনি।
ড. মারুফ আরও বলেন, প্রায়ই দেখা যায়, কারখানার আশপাশের খালি জায়গাতে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে শ্রমিকদের সেখানে রাখা হয়। ছোট্ট পরিসরে অপরিকল্পিত আবাসনে একসঙ্গে অনেকজন থাকার কারণে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফলে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
নিয়োগদাতা ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে দিয়ে ড. মারুফ আরও বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার অভ্যাস করতে হবে। আমাদের পরিবেশ সুরক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। সচেতনতাই পারে পরিবেশকে সুন্দর ও নির্মল রাখতে।’
একই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মালয়েশিয়ার সারাওয়াক রাজ্যেও। বলা হয়েছে, অভিবাসী শ্রমিকদের ম্যালেরিয়ার বিস্তার রোধে বাইরে থেকে আসা বিদেশি কর্মীদের আগাম স্ক্রিনিং করতে হবে।
দেশটির উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাতুক অ্যারন আগো দাগাং সম্প্রতি জানিয়েছেন, ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সারাওয়াক রাজ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ও ম্যালেরিয়া ভাইরাস শরীরে বহন করে মালয়েশিয়ায় প্রবেশকারী ৭ হাজার ২৯১ জন অভিবাসীর মধ্যে মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বৃক্ষরোপণ, খনি, নির্মাণ এবং অন্যান্য খাতে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাগুলোকে ভূমিকা পালন করতে হয়। সারাওয়াকে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নীতি অনুসারে শ্রমিকদের ম্যালেরিয়া স্ক্রীনিংসহ একটি মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে হবে বলেও নির্দেশনা দেন তিনি।