মাগুরা অফিস :
মাগুরায় আজ বৃহস্পতিবার মাদকের একটি মামলায় দুই ব্যক্তিকে গাছ লাগানোসহ সদাচরণের জন্য সহায়ক ৭ টি নির্দেশনা সম্বলিত ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত-১ এর বিজ্ঞ হাকিম মোহাম্মদ বুলবুল ইসলাম।
ব্যতিক্রমী ওই রায়প্রাপ্ত বাহরুল মল্লিক (৫৫) ও আরিফ আহম্মেদ লিটনের (৩৫) বাড়ি মাগুরা শহরের পারলা গ্রামে। রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাবলু জানান, ২০১৮ সালে ২৮ আগস্ট আসামীদের গাঁজা সেবনরত অবস্থায় ওই দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানার উপ সহকারি পরিদর্শক (এএসআই) অলিয়ার রহমান বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার সাক্ষ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ২৬ ধারার অধীনে অপরাধের শাস্তি কারাবাসের পরিবর্তে প্রবেশন অফিসারের তত্বাবধায়নে এক বছর সময়কালের জন্য ৭টি শর্তে মাগুরার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ মোহাম্মদ বুলবুল ইসলাম প্রবেশন মঞ্জুর করেন। এই প্রবেশনকালীন সময়ে আদালত যে ৭টি শর্ত পূরণের শর্ত দিয়েছেন সেগুলো হলো, প্রবেশনকালীন সময় দোষী সাব্যস্ত আসামী কোনরূপ অপরাধের সাথে জড়িত হবেন না। সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন।
সবার সাথে ভাল ব্যবহার করবেন। আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন। কোনরূপ মাদক বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করবেন না। কোন খারাপ সঙ্গীর সাথে আর মিশবেন না। প্রবেশনকালীন সময়ে আসামী পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসাবে ৫টি বনজ ও ৫টি ফলজ মোট ১০টি গাছ লাগাবেন।
প্রবেশনার আসামীরা প্রবেশনের কোন শর্ত ভঙ্গ করলে বা তার আচরণ সন্তোষজনক না হলে তার প্রবেশন আদেশ বাতিল করা হবে এবং অপরাধের জন্য নির্ধারিত দন্ডাদেশ ৩ মাসের কারাদন্ড ভোগ করবেন। প্রবেশনার কর্মকর্তা প্রতি ৩ মাস অন্তর পরপর শর্ত প্রতিপালন ও অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এ ব্যাপারে আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সজীব আহম্মেদ জানান, এ রায়ে তিনি সন্তষ্ট। এর মাধ্যমে আসামীরা নিজেদের শুধরে নিবে।
প্রসঙ্গত, মাগুরার মূখ্য বিচারিক আদালতে ইতিপুর্বে ২ টি মামলায় গাছ লাগানো, মুক্তিযুদ্ধের বই পড়া, মুক্তিযুদ্ধর ছবি দেখাসহ নানা নির্দেশনা সম্বলিত ব্যতিক্রমী রায় ঘোষিত হয়েছে।