জামালউদ্দিন :
সাতক্ষীরার অজ পাড়া গা থেকে উঠে আসা এক কৃতিসন্তন মোজাফ্ফার। যার মধ্যে তিন প্রতিভা- সাংবাদিক, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি। যেখানে যেমন সেখানেই তার প্রতিভা প্রস্ফুটিত। সে আর কেউ নয়, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোজাফ্ফার রহমান। বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করেছে। প্রতিদিন উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে এ ভাইরাস আক্রান্তে মৃত্যুর মিছিল যে কত লম্বা হচ্ছে তা ভাবলে গা শিউরে উঠছে। এর থেকে রেহাই পায়নি আমাদের বাংলাদেশ।
এ ভাইরাস প্রতিরোধে তালার খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফার রহমানের অক্লান্ত পরিশ্রম জনসাধারনের মনে সত্যিকারের মানবসেবক হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মহামারী প্রকোপ প্রতিরোধে মানুষটি প্রথম থেকেই জনসচেতনতায় লিফলেটসহ প্রতিরোধক সামগ্রী বিতরন, প্রবাসী ভাইদের দেশে ফেরার পর শতভাগ হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করনে কঠোর হওয়াসহ লাল পতাকা উত্তোলন করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত জোরদার করেছেন। মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, শিক্ষক, সাংবাদিক, স্থানীয় সকল রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ, ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশসহ সকলকে একত্র করে এ মহামারী প্রতিহত করতে দৃঢপ্রত্যয়ী মানুষটিই মোজাফ্ফর রহমান।
বর্তমান আমাদের দেশ এ ভাইরাস মোকাবেলায় কঠিন ক্রান্তিকাল পার করছে। এ সময় সকলকে ঘরে থাকতে প্রচারসহ অসহায় হতদরিদ্রদের মধ্যে নিজস্ব অর্থসহ সরকারী খাদ্য সামগ্রী ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন। ভাইরাস প্রতিরোধে দেশ তথা ইউনিয়নবাসীর সেবায় দিনরাত এক করে পরিশ্রমে যেন অন্ত নেই। অনাহারী অসহায় মানুষের ঘরে প্রকাশ্যে, গোপনে, ঘুটঘুটে অন্ধকারে খাদ্রসামগ্রী নিয়ে হাজির জনপ্রতিনিধি এ অতন্দ্র প্রহরী। গত ৪ঠা এপ্রিল গভীর রাতে সুনশান নিরবতা, বিদ্যুৎ নেই, হঠাৎ টর্চের আলোয় খাদ্রসামগ্রী নিয়ে হাজির চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে কথা হয় শুকতিয়া গ্রামের হতদরিদ্র বয়োবৃদ্ধ জেলে পরিবারের কর্তা শৈলেন্দ্র নাথ মন্ডল(৮৫) এর সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, সাংবাদিক মোজাফ্ফার রহমান শধুই একজন চেয়ারম্যান না নেহায়েত দেবতা। তা না হলে আমার ঘরে যেদিনই খাদ্য ফুরিয়েছে সেদিন রাতেই যেন স্বয়ং ঈশ্বর যেন তাকে মানুষরূপে দেবতার মত পাঠিয়েছেন।
মৃত্যুর খুব কাছাকাছি সময়ে এসেও স্বামী স্ত্রীর দু জনের সংসার চালাতে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া দেহ নিয়ে বিলখাল থেকে মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন কলিজার টুকরা শেষ বয়সের লাঠি প্রিয় (ছেলে)সাধন সন্ডলকে ক্যান্সারে বিধাতা পরপারে তুলে নিয়েছে গত কয়েক বছর পূর্বে। সত্যিই সমাজে এমন অসহায় দরিদ্র পরিবারের পাশে থাকতে পারা যে কত আনন্দের তা কেবলই জনগনের সেবক অতন্দ্র প্রহরী মোজাফ্ফার রহমানই অনুধাবন করছেন। এমন কথা এখন খলিষখালী ইউনিয়নের অসহায়, দরিদ্র, ছিন্নমূল শত শত মানুষের মুখে মুখে।
কেবলমাত্র তিনি জনসেবক নন তিনি রয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষাকতার মত মহান পেশায়। আমিরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরও দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তালা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের মত গুরুত্বপূর্ণ পদেও তিনি দায়িত্বে রয়েছেন। বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিসহ কয়েকটি গণমাধ্যমের একজন সফল সাংবাদিক হিসাবে গ্রহনযোগ্য এক পরিচিত মুখ। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে গুরুত্বপূর্ণ সব পদে দায়িত্ব পালনে যে কত নিরলশ পরিশ্রম করতে হয় সে কেবলই বহুগুনের অধিকারী মানুষটিই জানে। সাংবাদিকতা পেশায় জেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদকের পদসহ গুরুত্বপূর্ন পদে নেতৃত্ব দেওয়া মানুষটি সাংবাদিকতা মহান পেশার দায়িত্ব পালনে জেলার একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলা সত্যি এক কঠিন চ্যালেঞ্জ।
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জীবনবাজী রাখা মানুষটি এ প্রতিবেদকে জানিয়েছেন, সততা ন্যায়পরায়নতা ও অন্যায়কে প্রতিহত করে রক্ত চক্ষুকে তোয়াক্কা না করে মানব সেবা অব্যহত রাখতে বহু মামলা হামলা নির্যাতনের স্বীকার হয়েও একটুও দমিয়ে রাখতে পারেনি আমাকে। আমার যা অর্জন সবই জনসেবাই উৎসর্গ করা। কৃতি এ সন্তান সাতক্ষীরা তালা উপজেলার চোমরখালী গ্রামের কৃষক পিতা মৃত রিয়াজউদ্দীন মোড়লের জেষ্ঠ্য পুত্র। ১৯৭৬ সালে জন্মগ্রহন করে লেখাপড়ার পাশাপশি ১৯৯৩ সালে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। সেই যে মানবতার সেবা শুরু আর তাকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। চেয়ারম্যান হিসাবে বর্তমান তালা উপজেলায় করোনা প্রতিরোধে তার ভূমিকা প্রশংনীয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন।