হোম ফিচার মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেউ থাকেন আমেরিকা, কেউ যুক্তরাজ্যে,ভোগান্তিতে সাধারণ রোগীরা!

রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর) :

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) ১৩ বছর ধরে থাকেন আমেরিকায়। তার পরও তিনি রয়েছেন চাকরিতে বহাল। অভিযোগটি উঠেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) সন্দীপ কুমার দাঁ এর বিরুদ্ধে। অপরদিকে মাত্র ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর প্রায় ২ বছর পার হলেও এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেরেননি সুমন কুমার নামের এক চিকিৎসক। এদের মধ্যে রেডিও গ্রাফার ১৩ বছর ২ মাস আমেরিকায় এবং চিকিৎসক প্রায় দুই বছর যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের দাবি পদ শুন্য না হওয়ায় ওই পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না । এতে সেবা গ্রহনকারিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে এই দু’জনের বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি সকল নিয়ম-কানুন প্রয়োগের পরও কাগজে-কলমে তারা এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। প্রতিকারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার পত্র দিয়েও কাজে আসেনি বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিও গ্রাফি) সন্দীপ কুমার দা ২০০৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ৩ মাসের বহিঃগমনের ছুটি নেন। পরে জানাযায় তিনি ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) লটারি পেয়ে সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান। ছুটি শেষ হলে ওই পদ থেকে অবহ্যতি চেয়ে একই সালের ২ ডিসেম্বর সন্দীপ কুমার দাঁ’র বাবা নির্মল কুমার দাঁ একটি আবেদন করেন।

অব্যহতিপত্র মোতাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পদ শুন্য ঘোষনা চেয়ে একাধিকবার আবেদন করেন। কিন্তু অদ্যাবধি তাতে সাড়া মেলেনি। যে কারনে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল্যবান এক্স-রে মেশিনটি এক পর্যায় বিকল হয়ে যায়। এতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে আজও বি ত রয়েছে উপজেলাবাসি। সম্প্রতি নতুন আরও একটি এক্স-রে মেশিন কেনা হলেও পদ শুন্য না হওয়ায় নতুন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।

অপরদিকে একই পথ অনুসরন করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাঃ সুমন কুমার নাগ। তিনি ২০২০ সালের ১ নভেম্বর হতে ৩০ নভেম্বর অর্জিত ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। পরবর্তিতে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষে কারন দর্শানোর নোটিশসহ অফিসিয়ালি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনিও আজ অবধি আর কর্মক্ষেত্রে ফেরেননি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। অথচ স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ রেডিওগ্রাফি (এক্স-রে)। দীর্ঘকাল ভূক্তভোগিরা স্বাস্থ কমপ্লেক্সর এই সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তন্ময় কুমার বিশ্বাস বলেন, তাদের দু’জনের ব্যাপারে তিনিই শুধু নন, তার পূর্ব সুরিরাও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানালেও কোন সাড়া মেলেনি।

জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। তারা ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু সকল নিয়ম অনুসরনের পরও আজ কিছুই হয়নি। জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মনোজ কুমার রায় জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন