হোম অন্যান্যসারাদেশ মণিরামপুরে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে জমি দখল হামলায় নারী-পুরুষসহ ১০ জন আহত

মণিরামপুরে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে জমি দখল হামলায় নারী-পুরুষসহ ১০ জন আহত

কর্তৃক
০ মন্তব্য 114 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর (যশোর):

মণিরামপুরে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে জমি দখল করতে গিয়ে অস্ত্রধারি সন্ত্রাসীদের হামলায় নারী-পুরুষসহ ১০জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৫ জনকে মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবলীগ নেতা নয়ন আচার্য্যরে বাড়িতে তল্লাসী চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও ১শ’ গ্রাম গাঁজা সহ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৭ জনকে আটক করে। বুধবার সকালে উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের আচার্য্যপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানান, এদিন সকালে চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবলীগ নেতা নয়নের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে জমি দখল করতে গেলে মালিক পক্ষ বাঁধা দেয়ায় এ হামলা চালানো হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ১০ জন গুরুতর জখম হন। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৪ জনকে মণিরামপুর ও গুরুতর একজনকে যশোর ২শ’৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন- বাজিতপুর গ্রামের সুভাষ আচার্য্য (৫৩), প্রশান্ত আচার্য্য (৫১), নিদ্রা আচার্য্য (৫৩), মৃণাল আচার্য্য (৪৮), স্বর্ণালী আচার্য্য (২০)।

মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি আহত প্রশান্ত আচার্য্য জানান, বছরখানেক আগে তার বড় ভাই সুভাষ আচার্য্য কাকাতো ভাই চিত্ত আচার্য্যরে নিকট থেকে ১১ শতক জমি নায্যমূল্যে ক্রয় করেন। ইতিপূর্বে ওই জমি চিত্ত আচার্য্য তার আপন ছোট ভাই সত্য আচার্য্যের নিকট থেকে বিক্রি বাবদ বায়নাপত্র করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও সত্য আচার্য্য জমির মূল্যে পরিশোধ পূর্বক জমি দলির করতে ব্যর্থ হন। যে কারনে পরবর্তিতে চিত্ত আচার্য্য ওই জমি তার বড় ভাই সুভাষের কাছে নায্যমূল্যে পেয়ে জমি দলিল করে দেয়। কিন্তু জমি কেনার পর সুভাষ দখলে যেতে না পেরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান গাজী মাযাহারুল আনোয়ার স্থানীয় গণ্যমান্য বক্তিবর্গের উপস্থিতিতে কয়েক দফা শালিস করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ সেপ্টেম্বর ক্রয়সূত্রে জমি মালিক সুভাষ আচার্য্যকে দখল বুঝে দেয়। কিন্তু সত্য আচার্য্য গং চেয়ারম্যানের ওই শালিস ও দখল মানতে নারাজ। তারা ঘটনার দিন সকালে ওই জমিতে সত্য আচার্যের ভাইপো যুবলীগ নেতা নয়ন আচার্য্যরে নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা চাইনিজ কুড়াল, হাতুরী, জিআই পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুনরায় দখল করতে যায়। এসময় সুভাষ গং বাঁধা দেয়ায় চেষ্টা করলে তাদেরকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ হামলার ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী নয়ন আচার্য্যরে বাড়ি ঘিরে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আতিকুজ্জামান এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়নের বাড়িতে তল্লাসি চালায়। এসময় নয়নের বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র ও ১শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারসহ যুবলীগ নেতা নয়ন আচার্য্য, সত্য আচার্য্য, উত্তম আচার্য্য, জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য, আকাশ আচার্য্য, পবিত্র ব্যানার্জি ও পাপন আচার্য্যকে আটক করে ।

এ ব্যাপারে দূর্বাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মাযাহারুল আনোয়ার জানান, দলিল মূলে মালিক সুভাষকে জমি বুঝে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ নয়ন গং তা মানতে নারাজ, তারা ওই জমি জোর পূর্বক দখলে রাখতে চাই।
নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আতিকুজ্জামান জানান, ঘটনার পর নয়নের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও ১শ’ গ্রাম গাঁজাসহ জড়িত সন্দেহে যুবলীগ নেতা নয়নসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন