আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা ও ‘অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট’ পদ থেকে হুয়ান গুইদোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সঙ্গে দেশটির বৈদেশিক সম্পদ দেখভালের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে দলের বৃহত্তর ঐক্যের লক্ষ্যে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) এক ভোটাভুটির মাধ্যমে এসব পদক্ষেপ নিয়েছেন জোটের আইনপ্রণেতারা।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত ওই ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বিরোধী দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার ভারসাম্য বদলের বিষয়টি সামনে এসেছে। ভেনিজুয়েলায় ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বামপন্থি নেতা মাদুরোকে উৎখাত করতে বিরোধী জোট আরও বেশি করে জনগণ ও ভোটারদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
সেই লক্ষ্যে এদিনের ওই ভোটাভুটিতে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ ভেঙে দেয়া ও বৈদেশিক সম্পদ দেখভালের জন্য কমিশন গঠন বিষয়ক দুটি আর্টিকেল পাস করা হয়েছে। মোট ৭২ আইনপ্রণেতা পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৯ এমপি। আর বিরত ছিলেন মাত্র ৮ জন।
জোটের প্রধান চারটি দলের তিনটিই হুয়ান গুইদোকে সরিয়ে দেয়ার পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। গোষ্ঠীগুলোর নাম যথাক্রমে ‘জাস্টিস ফার্স্ট’, ‘ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন’ ও ‘আ নিউ এরা’। সরকার ভেঙে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক সম্পদ দেখাশোনার লক্ষ্যে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
গুইদোর অপসারণ ও সরকার ভেঙে দেয়ার পদক্ষেপে সমর্থন দেয়নি তার দল ভলান্তাদ পপুলার পার্টি। জোটের এ পদক্ষেপকে বিপর্যয় হিসেবে অভিহিত করেছেন গুইদো। তবে গুইদোবিহীন বিরোধী জোটের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউএস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো অবস্থায় ভেনিজুয়েলায় বিরোধী জোটকে সমর্থন দিয়ে যাবে ওয়াশিংটন।
২০১৯ সাল থেকে ভেনিজুয়েলার বিরোধী জোটের প্রধান মুখ ছিলেন তরুণ রাজনীতিক গুইদো। প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে উৎখাতে ওই সময় বিরোধী দলগুলোর সমর্থনে নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও সমমনা আরও বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের সমর্থনও আদায় করে নেন গুইদো।
২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক জয় নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন মাদুরো।তবে বেশিরভাগ বিরোধী দল ওই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। পাশাপাশি মাদুরোকে সরাতে ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করে। তবে নজিরবিহীন বিরোধিতার মধ্যেও এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে রয়েছে মাদুরো।