হোম অন্যান্যসারাদেশ বৃদ্ধ মা-বাবাকে ওষুধ কিনে দেয়ার কেউ রইলো না

অনলাইন ডেস্ক:

‘শরীর ভাল না, পেটে গ্যাসের সমস্যা জানালে আলামিন দুই হাজার টাকা পাঠায়। বৃহস্পতিবার সেই টাকা দিয়ে ওষুধ কিনেছি। কিন্তু শেষ রাতে শুনি ছেলে আর নেই, কিছুতেই মনটাকে বুঝাতে পারি না। মানতে পারছি না। সংসারের খরচ চালাতে সাভার ইপিজেড এলাকার পোশাক কারখানায় ডিজাইনারের চাকরি নেয়। কিন্তু এখন কি হলো? সংসার চলবে কিভাবে? আমাদের ওষুধ কিনে দিবে কে?’

এভাবেই বিলাপ করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নরসিংদীতে মাইক্রোবাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ঝালকাঠির রাজাপুরের পাড় গোপালপুর গ্রামের আল আমিনের (২৯) বাবা আব্দুল গনি।

আল আমিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবাসহ স্বজনরা।

শনিবার (২৫ আগস্ট) সকালে পাড় গোপালপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে জানাজা শেষে আল আমিনকে দাফন করা হয়। এতে এলাকার মানুষ ও প্রতিবেশীরা অংশ নেন। এর আগে শুক্রবার রাতে এসবি নিটিং লিমিটেড কারখানার কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে আল আমিনের লাশ বাড়িতে আনা হয়।

স্বজনরা জানান, সংসারের খরচ চালাতে সাভার ইপিজেড এলাকার একটি পোশাক কারখানায় রং ডিজাইনের কাজ নেন আব্দুল গনির সাত ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে আল আমিন। তার পাঠানো টাকায় চলতো সংসার।

‘অফিসের সকলের সঙ্গে সিলেট যাওয়ার বিষয়টি ছেলের মুখেই শুনতে পাই। এমন হবে জানলে যেতে দিতাম না’-বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন নিহত আলামিনের মা শাহিনা মাশপিয়ারা।

আলামিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকে বাড়িতে ভিড় জমান স্বজনসহ এলাকাবাসী।

প্রতিবেশীরা জানান, অল্প বয়সী যুবক আল আমিনের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তারা। এক বছর ছয় মাস আগে আল আমিন করেন। তার স্ত্রী সাদিয়া খাতুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রসঙ্গত, সাভার ইপিজেড এলাকার পোশাক শ্রমিকরা সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার পথে মধ্যরাতে নরসিংদীর শিবপুরে পাথারবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের মাইক্রোবাসের। নিহত হন চালকসহ সাত আরোহী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন