নিউজ ডেস্ক:
গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের দুইটিতে মৃত্যুদণ্ড ও অপরটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায়ের দিনটির সঙ্গে শেখ হাসিনার বিবাহবার্ষিকীর দিনটি মিলে যায়। ১৯৬৭ সালের এই দিনটিতেই শেখ হাসিনা পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ আলী মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে পড়ার সময় তাদের বিয়ে হয়। ২০০৯ সালের ৯ মে ড. এম এ ওয়াজেদ আলী মারা যান।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে পাঁচটি অভিযোগের দুইটিতে মৃত্যুদণ্ড ও অপরটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায় ঘোষণার সময় জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবীরা ছাড়াও জুলাই অগাস্টে নিহতদের কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যেভাবে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়েছে, সেগুলোর ভিডিও ও তথ্যপ্রমাণের বিবরণ দেওয়া হয়।
আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টের বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনানো হয়। বেলা সোয়া একটার দিকে গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন জনের সঙ্গে শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথোপকথনগুলো শোনানো হয়। কিছুক্ষণ আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময়ের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ শোনানো হয়।
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই এখন ভারতে অবস্থান করছেন।
একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন (১৭ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
