হোম অর্থ ও বাণিজ্য বিদ্যমান কোম্পানি আইন দ্রুত সংস্কারের তাগিদ

বাণিজ্য ডেস্ক:

ব্যবসায়িক আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইন সংস্কার এবং বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে তাগিদ দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কার বিষয়ক সেমিনারে এ কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সমাজের আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং দ্রুত বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি কর্পোরেট খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কোম্পানি আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দীর্ঘদিনের পুরানো এ আইনটি বর্তমানে দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বাত্মক ব্যবহারের মাধ্যমে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার ব্যবহার বাড়ানো এবং মেধাসত্ত্ব আইনের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন।

এছাড়াও কোম্পানি আইনটি বৈশ্বিক আইনের সঙ্গে মিল রেখে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’কে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান সামীর সাত্তার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আইন মন্ত্রণালয় খসড়া কোম্পানি আইনের ওপর বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছে, যা নিয়ে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, কোম্পানি আইনে বেশি মাত্রায় ক্ষমতা আরোপ ও শাস্তির বিধান না থাকা প্রয়োজন, কারণ এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস তথা আরজেএসসির কার্যক্রমে আরও অটোমেশন আনতে বর্তমানে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অটোমেশন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, অটোমেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে আরজেএসসির শাখা অফিস স্থাপনের কোনো প্রয়োজন হবে না।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, কোম্পানি আইনে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’কে অন্তর্ভুক্তির কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে কোনো কোম্পানির অবলুপ্তির প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ ও ব্যয়সাপেক্ষ, তাই প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনে বিষয়টি সহজীকরণে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা প্রয়োজন।

এছাড়াও খসড়া আইনে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর)’ এবং ‘মধ্যস্থতা’কে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করে রাশনা ইমাম বলেন, পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি নয়, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ‘স্বাধীন পরিচালক’ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

আইএফসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান বলেন, বর্তমান আইন আধুনিক অর্থায়নের উপকরণের জন্য উপযুক্ত নয়। সবার আগে ঝুঁকি কমাতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ অর্থনীতির দিক থেকে অসাধারণ উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ কোম্পানি আইনে আমূল পরিবর্তন করতে পারলে ব্যবসায়িক আস্থা বাড়বে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাভেদ আখতার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসসি) রেজিস্ট্রার (যুগ্ম সচিব) মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন