হোম বিনোদন বিকেলে জানা যেতে পারে হিমুর মৃত্যুরহস্য

বিনোদন ডেস্ক:

ছোটপর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় তার কথিত বন্ধু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি ওরফে উরফি জিয়াকে আটক করেছে র‍্যাব।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে বিকেল সাড়ে ৫টায় বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সেখান থেকে হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর আরও জানান, অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর খবরটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উত্তরার বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে পৌঁছায় পুলিশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রীর পালিত ভাই মিহির। তিনি জানান, হিমু উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর এলাকায় তার নিজ ফ্ল্যাটে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

হিমুর বন্ধুর বিষয়ে মিহির বলেন, আপুর (হুমায়রা হিমু) পূর্ব পরিচিত ছিল রুফি ওরফে উরফি জিয়া। তিনি মাঝে মধ্যেই বাসায় আসতেন। এ ছাড়া অভিনেত্রীর মৃত্যুর দিন দুপুর ২টার দিকে রুফি বাসায় এসেছিলেন। তারা দুজনেই বাসায় অবস্থানের সময় কোনো এক ফাঁকে হিমু ফ্যানের হুকের সঙ্গে প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। সেটা দেখতে পেয়ে তারা দুজনই হিমুকে উদ্ধার করে উত্তরা বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রুফি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। সঙ্গে হিমুর ব্যবহৃত মোবাইলটিও নিয়ে যান।

এদিকে হুমায়রা হিমুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থকালেও গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে অভিনেত্রীর লাশের সুরতহাল করেন উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মাসুদা খাতুন।

সুরতহাল শেষে তিনি বলেন, অভিনেত্রীর পরিচিতরা তাকে হাসপাতালে এনেছিল। আমরা তাকে হাসপাতালেই পেয়েছি। এখানেই আমরা প্রাথমিকভাবে হুমায়রা হিমুর লাশের সুরতহাল করেছি। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, তবে তার গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে। সম্ভবত তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, অভিনেত্রীর মৃত্যুর আসল কারণ চিকিৎসক বলতে পারবেন। তাই ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

২০০৫ সালে তিনি টেলিভিশন মিডিয়াতে এবং নাটকে যুক্ত হন মো. জামালউদ্দিনের নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনস্যাম্বলে। ২০০৬-এ হুমায়রা হিমুর প্রথম নাটক ‘ছায়াবীথি’ প্রচারিত হয়। একই বছর পিআই (প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর) নামের একটি সিরিয়াল নাটকেও অভিনয় করেন। এরপরে তিনি ‘বাড়ি বাড়ি সারি সারি’, ‘হাউজফুল’, ‘গুলশান এভিনিউ’ সহ অনেক জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করতে থাকেন। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

হুমায়রা হিমু ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। হিমু ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হন এবং এ কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্যজগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্যদলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন। তার মামা মূর্শেদ নাটকটিতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ এ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হিমুর। অভিনেত্রীর উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে: ডিবি, সোনাঘাট, চেয়ারম্যান বাড়ি, বাটিঘর, শোনেনা সে শোনেনা, সেলিম, মনও চোরা গলি, সুরের ফেরিওয়ালা, ছায়াবিবি, গানাদার, লেট ম্যারেজ, ভুতের গ্রাম, ছায়াবীথি, পিআই, শোধ, টুকরো ছবির এ্যালবাম, চুপি চুপি, নির্বিকার মানুষ প্রভৃতি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন