রাজনীতি ডেস্ক:
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা অবরোধ ও হরতালে সারাদেশে ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৭৬টি।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুলিশের সদর দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, নির্বাচন ঠেকাতে ডাকা দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতালে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৭৫টি যানবাহন ভাঙচুর, ২৪টি স্থাপনা ভাঙচুর ও ১১টি অন্যান্যসহ মোট ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২৯০টি যানবাহন, ১৭টি স্থাপনা ও ৬৯টি অন্যান্যসহ মোট ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিভিন্ন ঘটনায় দায়িত্বরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।
এরমধ্যে ২ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলায় আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের ২টি অফিসে নাশকতাকারীরা অগ্নিসংযোগ করেছে। ১৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন বরমী ইউনিয়নের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আ. জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি স্কুল ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। নাশকতাকারীদের দেয়া আগুনে বিদ্যালয়টির ৪টি বেঞ্চ ও ১টি টিনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অবরোধ চলাকালে ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ৩টি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা মহানগরে ১টি, ময়মনসিংহে ২টি, গাজীপুরে ১টি, নেত্রকোণায় ১টি এবং নওগাঁয় ১টিসহ ৬টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। কিশোরগঞ্জে ১টি, নোয়াখালীতে ২টি, সিলেটে ১টি, পাবনায় ১টি, দিনাজপুরে ১টি ও গাজীপুরে ৩টিসহ রেললাইনে ৯টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে রেললাইন কেটে ফেলার চেষ্টার ৩টি এবং গাইবান্ধায় রেললাইনের ফিস প্লেট খোলার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পাবনায় ট্রেনে পেট্রোল ও ডিজেল ভর্তি বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের ওপর অতিরিক্ত ৩ ফুট লম্বা ৩ ইঞ্চি চওড়া পাত সংযোজন করে নাশকতার চেষ্টা করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে রমনায় ২ জন, বংশালে ২ জন, মুগদায় ৪ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ২ জন, মোহাম্মদপুরে ১ জন, পল্লবীতে ৮ জন, কাফরুলে ১ জন, গুলশানে ৫ জন, ক্যান্টনমেন্টে ১ জন, খিলক্ষেতে ২ জন ও উত্তরা পূর্বে ১ জন।
এছাড়া ২৮ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগকালে ৬টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ জন ও পিকেটিং করাকালে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে নাশকতাকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘প্রেস’ লেখা জ্যাকেট পরে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, যা জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট- উল্লেখ করে ভাঙচুর ও নাশকতামূলক হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ পুলিশ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
অবরোধ-হরতালে পরিবহন বা স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে অন্যূন ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।