বান্দরবানের রুমায় র্যাবের সঙ্গে নতুন বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়েছে। এ সময় র্যাবের আট সদস্য আহত এবং পাঁচ জঙ্গি আটক হয়েছে
আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রেমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের দুর্গম রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ বিকেলে থানচিতে র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের বিষয়টি ব্রিফ করেন।
র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, আজ (মঙ্গলবার) কেএনএফ ও জামাতুল আনসারের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ওই সময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে। এ সময় র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা চলছে। তবে গোলাগুলিতে র্যাবের আট সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, জামাতুল আনসারের সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করে আসছে কেএনএফ। ইতোমধ্যে র্যাবের অভিযানে পাহাড়ের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনটির ৩৮ জনকে এবং কেএনএফের ১৪ জনকে যৌথ বাহিনী বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে আটক করেছে। গত ২৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত কেএনএফ সদস্যের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। আস্তানা থেকে পাওয়া গেছে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে কুমিল্লা থেকে আট জন তরুণ নিখোঁজ হন। তাদের স্বজনদের করা নিখোঁজ জিডির সূত্র খুঁজতে গিয়ে তথ্য পাওয়া যায়— নিখোঁজ তরুণরা নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার সদস্য হয়ে পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে ৩৮ জন জঙ্গি এবং পাহাড়ের সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফের ১৪ জন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। চলমান অভিযানে মঙ্গলবার সকালে রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেওয়া র্যাবের টিমের সঙ্গে কেএনএফ ও জামাতুল আনসারের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়েছে। অভিযানে র্যাবের আট জন সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জঙ্গি নির্মূলে ৮০ শতাংশ সফলতা পেয়েছি। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সংখ্যাও আগের চেয়ে কমেছে।’
র্যাব ডিজি আরও বলেন, ‘অভিযান চলমান রয়েছে। শতভাগ সফলতার পথেই আমরা এগোচ্ছি। জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলমান থাকবে।’
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, র্যাব কর্মকর্তা মশিউরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।