ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় এক যুবকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করার অপরাধে জোহরা বেগম (৪২) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিররণীতে জানা যায়, গত ২৭ মে, ২০২০ তারিখ ফকিরহাট উপজেলার পাগলা দেয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাকির শেখের স্ত্রী জোহরা বেগম তার সাত বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ করে প্রতবেশী বাবুল তালুকদারের ছেলে আ. কাদের তালুকদার (২৫) এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু ধর্ষণ আইনে ফকিরহাট মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৮/২০২০। উক্ত মামলার তদন্তভার উপ-পরিদর্শক মরিয়ম বেগম সীমাকে দেয়া হলে আসামী কাদের তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত না পাওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল করে উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি মামলাটির পুনরায় তদন্ত করে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাদী জোহরা বেগম কর্তৃক মিথ্যা এজাহার প্রদান করার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রদান করেন। ফলে ধর্ষণ মামলা থেকে কাদের তালুকদার ৩মাস ১১ দিন পর জামিনে মুক্তি লাভ করেন।
অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআই বাগেরহাট জেলা ইউনিটকে দায়িত্ব প্রদান করা হলে, পিবিআই তার প্রতিবেদনে জানায় যে, প্রতিবেশি বাবুল তালুকদারের জিম্মায় থাকা বাগানের কাঠ, বাঁশ, সুপরি, নারকেল ইত্যাদির ক্ষতি সাধন করায় জেহরা বেগমের সাথে উক্ত পরিবারের বাক বিতন্ডা হয়। ফলে উক্ত পরিবারকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে তার ছেলের বিরুদ্ধে নিজ শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করার মামলা দায়ের করেন। এ প্রতিবেদন পেয়ে ২০২১ সালের ০২ ফেব্রুয়ারী বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল-১ আসামী আ. কাদের তালুকদারকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি প্রদান করেন।
অপরদিকে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় আ. কাদের তালুকদারের পিতা বাবুল তালুকদার ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০/২০০৩ এর ১৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার নং-৩০/২০২১। দীর্ঘ তদন্তে জোহরা বেগম দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন।
মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আ. কাদের তালুকদার বলেন, শুধুমাত্র রাগের বশবর্তী হয়ে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো এবং আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য আমি জোহরা বেগমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করি।
ফকিরহাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম বলেন, জোহরা বেগমের করা ধর্ষণ মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়না জারি করেন। উক্ত আদেশ পালন করতে ফকিরহাট থানা পুলিশ জোহরা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে। নিয়ম অনুযায়ী তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।