হোম অর্থ ও বাণিজ্য ‘প্রস্তাবিত বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অসঙ্গতিপূর্ণ’

অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক:

এবারের বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের সুপারিশ বা প্রস্তাবের আশানুরূপ প্রতিফলন ঘটেনি। বরং স্মার্ট বাংলাদেশের উদ্দেশ্যের সঙ্গে তা যথেষ্ট অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মন্তব্য করা হয়।

রোববার (৪ জুন) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বাজেট প্রতিক্রিয়া শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন বক্তারা।

কারওয়ানবাজার বেসিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলন অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস), কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) যৌথ ভাবে এ সংবাদ সম্মেলন করে।

এতে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, আইএসপিএবি সভাপতি মো. ইমদাদুল হক এবং ই-ক্যাব সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন উপস্থিত থেকে নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বাজেট প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, সরকার প্রায় ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন। যা এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট। প্রতিবারের মতো এবারও এ বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের জন্য ইতিবাচক বা উল্লেখযোগ্য কোনো সুখবর নেই বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

পুরোপুরি হতাশা প্রকাশ করে বিসিএসের প্রতিনিধি বলেন, বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ল্যাপটপ, এফএমসি প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করার ফলে বর্তমানে মোট শুল্কহার ২৬ শতাংশ, যা এ বছর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু সেগুলো একই রকম আছে। একটুও পরিবর্তিত হয়নি। এতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হবে।

তার জানান, সুনির্দিষ্ট ও যৌক্তিক প্রস্তাব দেওয়ার পরও এ খাতের কর্পোরেট ট্যাক্স অব্যাহতির সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর, সফটওয়্যার ও আইটিইএসের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার, সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশ করা এবং সর্বোপরি দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশে সফটওয়্যার ক্রেতাকে বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করেছিলাম। অথচ এগুলোর কোনোটাই বিবেচনায় আনা হয়নি।

অপরদিকে, ৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছে অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ ও সিকিউরিটি সফটওয়্যারের আমদানির ওপর। সফটওয়্যারের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রেতারা তুলনামূলক কম মূল্যে বাংলাদেশ থেকে বিপিও পরিষেবা গ্রহণ করে। তাই বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তির শিল্পের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। অথচ অপারেটিং সিস্টেমেরমত সফটওয়্যার আমদানিতে মূসক আরোপ করার ফলে এই শিল্পের সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এই শিল্পে মাত্র ৩০০ জনশক্তি থেকে বেড়ে বর্তমানে ৭০ হাজারেরও অধিক জনশক্তির কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বাজেট প্রস্তাবনায় এই শিল্পের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স অব্যাহতির সময়সীমা ২০২৪ সালে থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করার অনুরোধ জানানো হয় অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে। সুবিধা না দিলে ভবিষ্যতে বিপিও পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি পাবে, ক্রেতা আকর্ষণ কমে যাবে, নতুন বিনিয়োগ ব্যাহত হবে এবং সর্বোপরি বিপিও শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন