অনলাইন ডেস্ক:
নানামুখী সংস্কার, নির্বাচন আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছে অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর চলতি বছরের ৮ আগস্ট নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর পার হয়েছে ১০০ দিন বা তিন মাসের একটু বেশি সময়। সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি সংস্কার, নির্বাচন, শেখ হাসিনার বিচার, অর্থনীতি নিয়ে কথা বলেন।
ভাষণের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদ এবং গত জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহীদকে স্মরণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপরেই সামনে আনেন জুলাই আগস্টে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনার বিচার প্রসঙ্গ। জানান, ভারত থেকে ফেরত চাওয়া হবে শেখ হাসিনাকে, গত ১৫ বছরে সব অপকর্মের বিচারও হবে।
ড. ইউনুস কথা বলেছেন নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন এবং সংস্কার ইস্যুতে। তবে সবকিছু একেবারে ভেঙে বলেননি তিনি, হয়েছেন কৌশলী। জানিয়েছেন, নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এটা আর থামবে না।
কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথাও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেছেন, নির্বাচন কবে হবে, অন্যদের মতো সেই প্রশ্ন তার মনেও রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। তারপর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব তাদের উপর বর্তাবে। তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না দেওয়ায় আশাহত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এই আশাহত হওয়ার কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টা কালকে ১০০ দিনের পূর্তিতে একটা ভাষণ দিয়েছেন। ভালো হয়েছে। অনেকে আশান্বিত হয়েছেন, আমি একটু আশাহত হয়েছি। আমি আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা তার সব প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যাটা চিহ্নিত করে নির্বাচনের জন্য একটা রূপরেখা দেবেন।’
দ্রুত নির্বাচন হলে দেশের মঙ্গল হবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ধরনের সরকার যতদিন থাকবে, সমস্যা ততো বাড়বে। কারণ এরা নির্বাচিত নয়। তাই সরকারকেই সেটি চিন্তা করতে হবে।’
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি এবং দেব। তবে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বসে আছে। তারা সংস্কার করতে দেবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখছি না। এগুলো দৃশ্যমান করুন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এ সরকার পারবে, বাংলাদেশের মানুষ পারবে এবং তরুণেরা পারবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে।’